জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। তবে প্রভাব খাটিয়ে জনি দায়মুক্তি পাবেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

আলোচ্যসূচিতে তদন্ত প্রতিবেদন বিবেচনা থাকার বিষয়টি নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন সিন্ডিকেট সদস্য নিশ্চিত করেছেন। এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে তদন্ত কমিটিকে চাপ প্রয়োগ করে লঘু শাস্তির সুপারিশ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত জনি প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় নাম প্রকাশ করতে চাননি কেউ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘আমরা তদন্ত শুরু করার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। যাতে মাহমুদুর রহমান জনিকে লঘু শাস্তির সুপারিশ করা হয়। তাই আমরা কোন শাস্তির সুপারিশ করিনি। তদন্ত প্রতিবেদনে আমরা পুরো ঘটনা উত্থাপন করেছি। এছাড়া মাহমুদুর রহমান জনির কর্মকাণ্ডগুলো দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের কোন ধারায় অপরাধ বলে গণ্য হয়েছে এবং সেই ধারার বিপরীতে কি শাস্তি হতে পারে- তা উল্লেখ করেছি।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনি ২০১২ সালে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক নারীর সঙ্গে ‘অনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে একই ডিপার্টমেন্টের ৪২তম ব্যাচের ছাত্রী ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক নারী শিক্ষকের সঙ্গে অফিসকক্ষে তোলা তার অন্তরঙ্গ একটি ছবি ফাঁস হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দেয়ালে পোস্টারিং করা হয়। পরে জনির বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে গত ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির রিপোর্ট পূর্ণাঙ্গ হয়নি মর্মে পুনরায় স্পষ্টীকরণ কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

চলতি বছর জানুয়ারিতেও একই বিভাগের ৪৩ ব্যাচের আরেক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জনির পক্ষে ‘দায়মুক্তি’ পত্র লেখানোর অভিযোগ ওঠে।

সবশেষ ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযোগের ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

বার্তা বাজার/জে আই