ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্ব বন্টন ও আবাসিক চিকিৎসকদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া চিকিৎসদের সাথে তত্ত্বাবধায়কের সাথে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এর জেরে তত্ত্বাবধায়কে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেছে এক আবাসিক চিকিৎসক। সোমবার দুপুরে এই ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হলে প্রায় দেড় ঘন্টা চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে সদর থানা পুলিশ।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কে ডাক্তার ওয়াহীদুজ্জামান জানান, সকালে হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের তিনজন চিকিৎসক আমার কক্ষে আসেন। এসময় তারা বলেন, তিনদিন বহি: বিভাগের রোগী দেখবেন এবং তিনদিন বৈকালিক সেবা দিবেন। আমার কাছে মনে হয়েছে বহি:বিভাগ বন্ধ থাকলে রোগীরা চিকিৎসক না পেলে অসন্তোষ হবেন। আমি তখন বলেছিলাম বহি:বিভাগ সপ্তাহে ৬দিনই খোলা রাখা হোক, আর বৈকালিক সেবা প্রয়োজনে কমিয়ে করতে।

তখন তারা বলেন আগে যেভাবে চলে আসছিল সেভাবেই আমরা করবো, আপনার কথা আমরা মানবো না। তখন চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক ওবায়দুল্লাহ উচ্চবাচ্য করলে আমি বেয়াদব বলি। এই কথা বলার পর সে আমার দরজায় জোরে ধাক্কা দিয়ে ভেঙ্গে বাইরে চলে যায়। এরআগে, চলতি মাসে আবাসিক চিকিৎসক রানা নূরুস শামস ও ফাইজুর রহমান নিয়মিত দায়িত্ব পালন না করায় তাদের বেতন বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।

এই নিয়ে দুজন ক্ষুব্ধ ছিলেন। আজকের ঘটনার পর চিকিৎসক ওবায়দুল্লাহ ওই দুইজন আরএমও’র কাছে যান। রানা নূরুস শামস ও ওবায়দুল্লাহসহ তিনজন চিকিৎসক আবার আমার কক্ষে আসেন। রানা নূরুস শামস আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেন এবং হুমকি দেন। পরবর্তীতে অন্যান্য চিকিৎসকদের সাথে মিটিং করেন। এরপর তারা বাইরে থেকে সিসি ক্যামেরার লাইন বন্ধ করে আবার কক্ষে আসেন। এসময় আরএমও রানা নূরুস শামস জানান আমি তাদের হয়রানি করি এবং তারা আমার আদেশ মানবেন না। আমি বিষয়টি আমার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

আবাসিক চিকিৎসক রানা নূরুস শামস বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান নিজের খেয়াল খুশি মত হাসপাতাল চালাচ্ছেন। যাকে ইচ্ছা শোকজ চিঠি দিচ্ছেন। সকল চিকিৎসকদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ গালিগালাজ করেন। তিনি সরকারী এম্বুলেন্স ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত জেলার বাহিরে যান। আমরা উনার অধীনে আর কাজ করবো না। তবে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকবে।

চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক ওবায়দুল্লাহ বলেন, দায়িত্ব বন্টন নিয়ে কথা বলার সময় তত্ত্বাবধায়ক সাহেব আমাকে বেয়াদব বলেছেন। তিনি এই কথা বলতে পারেন না। আমি বিষয়টি সহকর্মীদের জানাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসাইন বলেন, বিষয়টি চিকিৎসকদের নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়।

বার্তা বাজার/জে আই