নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে চলতি বছরে ১৪ জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে চারজন মেয়ে ও ১০ জন ছেলের নাম রয়েছে।

ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নাম ও তাদের ভর্তি পরীক্ষায় রোল নম্বর হল, মাহির নুরায়ন স্বচ্ছ ২৩১, লামিসা ২৬৫, নোমান ৯১১, রিসা ৪৩১, সৈকত ৫৪১, রাব্বি ৫৫২, আইনুল বারি ৮২০, আতিকুল সিহাব ৮২৭, বৃষ্টি রায় ৮৭১, ইসরাত ১২৮২, ত্বাকি আহমেদ সাদ ১৩০৮, তূর্য্য ১৪৪০, বাঁধন ১৫০৮ এবং শাহরিয়ার কবির সিয়াম ৯১৭।

সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে প্রতিবছর উত্তীর্ণ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী শুধু বুয়েটে নয় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজসহ বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। এর আগে এ বছরে প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ছেলে ২০ জন ও মেয়ে ১৫ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিলো ৪৩।

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক বার্তাবাজারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খল পরিবেশ। পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকির ফলে প্রতিবছর আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করছেন শিক্ষার্থীরা। মূলত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিবছর মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ধারাবাহিক সফলতা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে। এ বছর প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এটি কোভিড ব্যাচ ছিল। সেভাবে আমরা নার্সিং করতে পারিনি। তারপরও এবার ১৪ জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গত বছর ১৯ জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। আগামী দিনে এ সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

এদিকে রেকর্ড পরিমাণ শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।

বুয়েটে ভর্তি সুযোগ পাওয়া বৃষ্টি রায় বার্তাবাজারকে বলেন, এই কলেজের শিক্ষকরা আমার বাবা-মায়ের মতোই। তারা প্রতিটি বিষয়ে ভালোবেসে পাঠদান করান। আমি গর্বিত এই কলেজের একজন শিক্ষার্থী হতে পেরে।

ত্বাকি আহমেদ সাদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বার্তাবাজারকে বলেন, আমার কলেজের শিক্ষকরা অনেক আন্তরিক। শিক্ষকদের আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ। তাদের উৎসাহ ছিল বলেই আজ আমি ও আমার বন্ধুরা বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেয়েছি। এই কলেজের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

উল্লেখ্য, নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের আগের নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় (টেকনিক্যাল কলেজ)। ২০১৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নাম রাখে। কলেজটিতে কেবলমাত্র বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে।

১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে ওঠে। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানেও গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। উদ্দেশ্য ছিল এখান থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জন্য দক্ষ, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলা। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত হয়।

প্রতিবছর এ কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। এ সাফল্যের কারণে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি কলেজটি পরিদর্শন করে ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বার্তাবাজার/রাহা