মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বড় কেশবপুর ও কাঁঠালবাড়ি মৌজায় শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলোজি স্থাপন প্রকল্প থেকে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করে একটি দালাল চক্র। জমির শ্রেনি পরিবর্তন করে বন্দোবস্ত বহির্ভুত জমির কাগজপত্র তড়িখড়ি তৈরী করে টাকা তুলে নিতে চেষ্টা করে চক্রটি। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরকারের কোটি কোটি টাকা দালালের হাত থেকে রক্ষ পেয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ও এমন আরও ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে তাদের সামনে এখনি আনা হচ্ছে না বলে জানা যায়। এমন কূচক্রী মহলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যহত থাকবে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

জানা যায়, ০৩/২০২০-২০২১ এলএ কেসে মোট ৭০.৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে বড় কেশবপুর মৌজায় বিআরএস ১ নং খাস খতিয়ানে ১০৪৮ দাগে ৬২.২৫ শতাংশ জমির শ্রেণি খাল। ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত এই খাল ‘সাধারণ ব্যবহার্যে হেতু বন্দোবস্তের বহির্ভূত’ থাকলেও সুকৌশলে সম্প্রতি একটি চক্র বন্দোবস্ত নিয়ে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ গ্রহণের চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় তা ভেস্তে যায়। জেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় রক্ষা পেয়েছে সরকারের প্রায় ৩ কোটি টাকা।

৮টি পরিবার খাল শ্রেণির জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে মোট ১ একর ২৫ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত গ্রহণ করে। শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলোজি স্থাপন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে তারা এই জমি নিজ নামে নামজারী করে ক্ষতিপূরণের অর্থ উত্তোলনে তড়িঘড়ি শুরু করে এবং অর্থ ছাড়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দকে তদন্ত করার নির্দেশ দিলে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এই বন্দোবস্ত গ্রহীতারা কেউই প্রকৃত ভূমিহীন নয়। পাশাপাশি এই জমি বন্দোবস্ত বহির্ভূত খাল শ্রেণির জমি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হলে শিবচরের ইউএনও উপজেলা কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির মাধ্যমে এই ৮টি বন্দোবস্ত বাতিলের প্রস্তাব পাঠায়।

প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয় বন্দোবস্ত গ্রহীতারা কেউই প্রকৃত ভূমিহীন নয় এবং অনেকেই অন্য এলাকার বাসিন্দা। পরে জেলা কমিটির মাধ্যমে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক এই বন্দোবস্ত বাতিলের আদেশ দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ বলেন, ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত খাল শ্রেণির জমির ক্ষতিপূরণের অর্থ ব্যক্তিমালিকের নামে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সম্প্রতি জেলা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির সভায় এই ৮টি বন্দোবস্ত বাতিল করে তা খাস খতিয়ানে আনা হয়েছে। এই অর্থ সংশ্লিষ্ট সরকারি খাতে জমা দেওয়া হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কিছু ব্যক্তি ২০১৮ সালে এই খাল শ্রেণির জমি বন্দোবস্ত প্রাপ্ত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়নের অংশ হিসেবে এই খাস খতিয়ানের অর্থ আত্মসাতের অপচেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে। এর আগেও আমরা খাস খতিয়ানের জমির ক্ষতিপূরণের অর্থ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। জনগণের ভোগান্তি লাঘব করে সরকারি স্বার্থ রক্ষায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। এমন ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে নামগুলো সামনে আনছি না।


বার্তা বাজার/এইচএসএস