গত এক বছরের কর্মকাণ্ডকে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ এর সবচেয়ে সম্মানজনক পদক পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ (পিপিএম)। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা দমন ও নাশকতাকারীদের গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্যভেদসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডকে বিশেষ গুরুত্বে এ পদক দেয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক নির্মূল, দুর্ধর্ষ ডাকাত গ্রেফতারসহ বিভিন্ন কাজের মূল্যায়ন করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ তাঁর প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দ্বিতীয় বার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)’ পেলেন। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স প্যারেড গ্রাউন্ডে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদকে সম্মানজনক পিপিএম পদকটি তুলে দিয়েছেন।

এছাড়াও লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘স্লোগান’কে পুলিশ সপ্তাহ, ২০২৪ এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। ৩য় দিনের কার্যক্রম অনুষ্ঠানে এবারের পুলিশ সপ্তাহের স্লোগান ও মূল প্রতিপাদ্য বিষয়কে (“স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ”) সরকারের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি মর্মে উল্লেখ করে এই স্লোগানের উচ্ছ্বসিত ভূঁয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ও স্লোগান নির্বাচন করা হয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ কর্তৃক প্রেরিত প্রস্তাবনা হতে। যা লক্ষ্মীপুর পুলিশের আরো ১টি অনন্য অর্জন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদের (রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা)। ১২টি অবদানের বিষয় বিবেচনার মধ্যে রয়েছে, লক্ষ্মীপুরে ২০২৩ সালে যোগদানের পর তার সরাসরি দিকনির্দেশনায় ২টি বিদেশি রিভলবার , ৩টি বলজি, ২০রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার- আসামি গ্রেফতার। বিপুল মাদক উদ্ধার হওয়াসহ ১৮৪ টি মামলায় ২৪২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সময়ে ১টি বাস, ১টি পিকআপ, ১টি ট্রাক, ১টি সিএনজি, ৬টি মোটরসাইকেল, ৬টি অটোরিকশাসহ খোয়া যাওয়া স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন, গরু, গ্রামীণফোন টাওয়ারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়। চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনেও তিনি পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। তার দিকনির্দেশনা ও তদারকিতে লক্ষ্মীপুর জেলার তিনটি চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত সব আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। মামলা ও ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তিতেও তার অবদান বিবেচিত হয় পদক পাওয়ার ক্ষেত্রে।

তার সময়ে জেলায় মোট ৬৬৬টি মামলা নিষ্পত্তিসহ ১০৪৭টি গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ১৮৩টি সাজা পরোয়ানা তামিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৪৬৬টি পরোয়ানা রিকলসহ অন্যান্যভাবে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে ৫১৯টি ছোটখাটো বিরোধ নিষ্পত্তি করা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন কার্যক্রম, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ ও তদন্ত কার্যক্রমকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ডিএমপির ডিবিতে থাকাকালীন আলোচ্য সময়ে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ-তদন্তে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

উল্লেখ্য- প্রতিবছর পুলিশ সার্ভিসে কৃতী সদস্যদেরকে বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পদকে ভূষিত করা হয়ে থাকে। এটা তাদের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজের উৎসাহ জোগাবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে অপরাধ নির্মূলে ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহকে সামনে রেখে পদক পাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যরা তাদের কার্যক্রমের বিস্তারিত জমা দেন পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগে। এর ওপর ভিত্তি করে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’, ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ এই চার ক্যাটাগরিতে সদস্যদের পদক দেয়া হয়।