কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট করতে এসে ইয়াছিন (১৯) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক আটক হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ওই রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে পুলিশ।

কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মকর্তা জানায়, মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল ৪নং ওয়ার্ডের জাকির হোসেন ও হাসিনা বেগমের ছেলে হিসেবে জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে আসে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন। তার সাথে কথা বলে সন্দেহ হলে নাম-ঠিকানা জিজ্ঞেস করা হয়। এ সময় সে সঠিকভাবে তার নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি। পরে তাকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন জানায়, সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে।

মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বøক-৯ থাকতো । মিয়ানমারের বলিবাজারে থাকা তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার কন্টাক্ট দেয়। পরে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া জানান, এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। পাশাপাশি তারা কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছেন এ বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

এদিকে মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন রোহিঙ্গা যুবকের নামে জন্ম নিবন্ধন করে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রতিটি জন্ম নিবন্ধন যাচাই বাছাই করে দিয়ে থাকি। ওই রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের পাসপোর্ট করতে যেই জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ব্যবহার করেছে, সেটি পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের মমিন মিয়ার নামে আমার পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন করে দেয়া হয়েছে। যার সকল ডকুমেন্ট আমাদের কাছে রয়েছে। মূলত একটি চক্র আমাদের পরিষদের ওয়েবসাইট হ্যাক করে এই জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ব্যবহার করে ওই রোহিঙ্গা যুবকের নাম পরিবর্তন করেছে। যা আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে রেখেছি।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, প্রাথমিকভাবে যাচাই বাছাই করে যেটি মনে হয়েছে। মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন থেকে জন্ম নিবন্ধনটি করা হয়নি। জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ব্যবহার করে অনলাইনে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ওয়েবসাইট হ্যাক করে করা হয়েছে কিনা এই বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।