কিলিয়ান এমবাপ্পের রিয়াল মাদ্রিদেরে সঙ্গে চুক্তি করার গুঞ্জন নতুন কিছু নয়। প্রতিটি মৌসুম শেষে এই গুঞ্জন এখন অভ্যাসে রূপান্তর হয়েছে। এবার স্প্যানিশ গণমাধ্যম কাদেনা এসইআর তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে গ্রীষ্মের দলবদলে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমবাপ্পে।

পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষ না হওয়ায় গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে যেতে পারেননি এই ফরাসি তারকা ফুটবলার। চলতি মৌসুম শেষেই পিএসজি সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এমবাপ্পের। তাই ফ্রি এজেন্ট হিসেবে তাকে দলে নিতে পারবে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

জানা গেছে, এমবাপ্পে ফ্রি এজেন্ট হলেও তার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হবে মাদ্রিদকে। উচ্চ বেতনের পাশাপাশি বড় অঙ্কের সাইনিং বোনাসও চান তিনি। ফরাসি এই ফুটবলারের ইচ্ছে, ইউরোপের সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ফুটবলার হতে। আর এই কারণে মৌসুম প্রতি পাঁচ কোটি ইউরো বেতন দাবি করছেন তিনি।

বেতনের পাশাপাশি এমবাপ্পে প্রায় ১২ কোটি ইউরো সাইনিং বোনাসও নিতে চান রিয়ালের কাছ থেকে। শুধু তাই নয়, ইমেজ স্বত্বের জন্যও বোনাস পেতে চান বিশ্বকাপজয়ী এই ফরাসি তারকা।

কিন্তু এমবাপ্পের চাওয়ার সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের দেয়ার ইচ্ছের মধ্যে রয়েছে বিশাল পার্থক্য। পাঁচ কোটি ইউরো বেতন দাবি করা এমবাপ্পেকে ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বেতন দিতে রাজি স্প্যানিশ ক্লাবটি।

আর ১২ কোটি ইউরো সাইনিং বোনাসের পরিবর্তে ৬ কোটি ইউরো সাইনিং বোনাস দিতে চায় স্প্যানিশ ক্লাবটি। অর্থ মূল্যে বড় পার্থক্য থাকলেও দুই পক্ষই চায় যত দ্রুত সম্ভব দর-কষাকষি শেষ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে।

এর আগে ২০১৭ সালে মোনাকো ছেড়ে পিএসজিতে আসেন এমবাপ্পে। তবে শৈশবে তার স্বপ্ন ছিল একদিন রিয়ালের হয়ে খেলার। নিজের সেই স্বপ্নের কথা সরাসরি বলেছেনও এই ফরাসি তারকা।

কয়েক দিন আগে রিয়ালে প্রথমবার ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মুগ্ধতা ঝরেছে এমবাপ্পের কণ্ঠে। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়ের মুগ্ধতার কথা জানতে পেরে রিয়ালও উদ্যোগী হয় তাকে কিনতে।

কিন্তু গত কয়েক মৌসুম ধরে এমবাপ্পেকে প্যারিস থেকে মাদ্রিদে নেওয়ার চেষ্টায় একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছে রিয়াল। ২০২১ সালের জুনে এই ফরোয়ার্ডের মাদ্রিদ যাওয়া ঠেকাতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁখো।

এরপর গত গ্রীষ্মের দলবদলে এমবাপ্পে–পিএসজির সম্পর্ক খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়ায়। ফরাসি ফুটবলারের পাঠানো এক চিঠিকে ঘিরে ঘটনার শুরু। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর চুক্তি নবায়ন করবেন না। জবাবে পিএসজি জানায় চুক্তি নবায়ন না করলে তখনই ক্লাব ছাড়তে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ায় প্রাক–মৌসুম সফরেও বাদ পড়তে হয় এমবাপ্পেকে। হুমকি পান পুরো মৌসুম বেঞ্চে বসে থাকারও। নানা ঘটনার পর পিএসজিতেই থেকে যান এমবাপ্পে এবং নিয়মিত খেলেও চলেছেন। এখন শেষ পর্যন্ত এ ঘটনা কোথায় গিয়ে শেষ হয়, সেটিই দেখার অপেক্ষা।

বার্তা বাজার/জে আই