পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান একে সামসুদ্দিন ( আবু মিয়া)’র বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন ইউপি সদস্যরা। অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যানকে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের সতন্ত্র প্রার্থীককে সমর্থন করার ফলাফল বলে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সাধারণ সদস্য এবং ৩ জন সংরক্ষিত নারী সদস্যের স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাবের একটি চিঠি জমা দেওয়া হয়। ওই অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদ অংশের কাবিখা, কাবিটা, টিআর, এলজিএসপি, এডিপি, মৎস্য এবং ৪০ দিনের কর্মসূচিসহ উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চেয়ারম্যান একে সামসুদ্দিন একাই করেন। শুধু নামমাত্র ইউপি সদস্যদের সিপিসি (প্রকল্প সভাপতি) করা হয়। গত এক বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদের কোন সদস্যকে সম্মানি ভাতা দেওয়া হয়নি। জন্মনিবন্ধন এবং ট্যাক্স (কর) বাবদ আদায় করা টাকা হিসাব নিকাশ না দিয়ে চেয়ারম্যান নিজেই আত্মসাৎ করেন।

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেওয়া অনাস্থা প্রস্তাবে আরও বলা হয়, চরমোন্তাজ ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেনের কাছ থেকে সারের ডিলার ও টিউবওয়েল বাবদ দুই লক্ষ ৮০ হাজার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেল্লাল হোসেনের কাছ থেকে টিউবওয়েল বাবদ দুই লক্ষ, ৩ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলী আক্কাসের কাছ থেকে মুজিববর্ষের ঘর এবং টিউবওয়েল বাবদ তিন লক্ষ ৬০ হাজার এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে মুজিববর্ষের ঘর বাবদ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন চেয়ারম্যান।

নিজ পরিষদের সদস্যদের দেয়া অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান একে সামসুদ্দিন বলেন, ‘এইটা কাল্পনিক এবং এটা অসত্য-বানোয়াট। সংসদ নির্বাচনে আমি ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ করেছি-এটা সেটারই প্রতিফল। ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি ভুয়া। আমি কোন কাজের সিপিসি হয়নি। ওগুলো সব ভুয়া।’ এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেয়েছি। এখন যাচাই-বাছাই এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্যঃ অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ সনের ৬১ নম্বরের সপ্তম অধ্যায় পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য সম্পর্কিত বিধানে বলা হয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাব পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করবেন। ওই কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ১০ কার্যদিবসের সময় প্রদান করে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন। ৪ নম্বর উপধারায় বলা হয়, জবাব সন্তোষজনক না হলে উপধারা-৩ অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা জবাব প্রাপ্তির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে যে সকল অভিযোগ বর্ণনা করা হয়েছে, সে সকল অভিযোগ তদন্ত করবেন। এছাড়াও ৫ থেকে ১৩ নম্বর উপধারা অনুসরণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পর সিদ্ধান্ত নিবে সরকার।

বার্তা বাজার/জে আই