ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান হামলায় ইতালি যদি অংশ নেয়, তাহলে দেশটি হুথি বিদ্রোহীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। সোমবার হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ এক নেতা ইতালির বিরুদ্ধে এই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে হামলায় অংশ নিলে ইতালিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে হুথি। ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ বিপ্লবী কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আলী আল-হুথি ইতালির দৈনিক লা রিপালিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে ইতালিকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে এবং গাজায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আর এসবই হবে এই অঞ্চলে শান্তি অর্জনের একমাত্র উপায়।

গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক ও নৌবাহিনীর জাহাজ লক্ষ্যে করে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে হুথিরা। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাথে হামাসের যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজে এই হামলা চালাচ্ছে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি। গাজায় যুদ্ধের অবসান না ঘটা পর্যন্ত এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।

হুথিদের হামলায় বিশ্বের অনেক বড় শিপিং কোম্পানি সুয়েজ খাল দিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপের আশপাশের দীর্ঘ এবং অত্যধিক ব্যয়বহুল রুটে জাহাজ পরিচালনা করছে। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ পণ্যসামগ্রী সুয়েজ খালের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়।

এদিকে, শনিবার ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এক বিবৃতিতে দেশ দুটি বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক এবং বাণিজ্যিক জাহাজের পাশাপাশি লোহিত সাগরে চলাচলকারী নৌযানগুলোর বিরুদ্ধে হুথিদের ক্রমাগত আক্রমণের জবাবে ইয়েমেনের ১৩টি স্থানে ৩৬টি হুথি লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা চালানো হয়েছে।’

এর আগে, গত শুক্রবার ইতালি ইয়েমেনের হুথিদের হামলা থেকে জাহাজগুলোকে রক্ষায় লোহিত সাগরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌ মিশনের কমান্ডে অ্যাডমিরাল প্রদান করবে বলে জানায়।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হতে যাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই মিশনের লক্ষ্য লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে রক্ষা এবং আগেভাগেই হামলা ঠেকানো। তবে মিশনটি হুথিদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের হামলায় অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।

বার্তা বাজার/জে আই