ফিলিস্তিন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজ নিজ দেশে চাপের মধ্যে আছেন। আর এ নিয়ে প্যারিসে বৈঠক চলছে কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে। সেখানে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে মিশর, কাতার এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা।

এরই ভেতরে জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণের ঘটনা ঘটে। যেখানে কয়েকজন মার্কিন সেনা নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশত মার্কিন নাগরিক।

এতে দেশের ভিতর চাপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। রিপাবলিকানরা সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে ডেমোক্রেটরা আরো একটি যুদ্ধে যেতে বাধা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস এবং পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। তারপরেই কৌশলী আক্রমণের কথা জানান তিনি। তবে বিশদে সেই কৌশলের কথা প্রকাশ করেননি তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন, আঘাতের জবাব দিতে প্রস্তুত আমেরিকা।

মঙ্গলবার পেন্টাগন এবং হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আমরা জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি। খুব শিগগির এই জবাব দেয়া হবে। তবে কীভাবে জবাব দেয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি বাইডেন।

এর আগে সোমবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, জবাব দেয়া হলেও মধ্যপ্রাচ্যে আরো একটি লম্বা লড়াইয়ে অংশ নিতে চাইছে না আমেরিকা।

অর্থাৎ, ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে না। এদিন সাংবাদিকেরা বাইডেনকে ইরান নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি কি এই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেন?

বাইডেন জানান, ইরান সমস্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে আমেরিকার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য। বিভিন্ন স্তরে আক্রমণ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, নানা স্তরে জবাব দেওয়া হতে পারে।

অর্থাৎ, একবার আক্রমণ না চালিয়ে নানা দিক থেকে ইরান এবং তার মদতপুষ্ট গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, সমস্ত পণবন্দিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল কোনোরকম সংঘর্ষ-বিরতিতে যাবে না।

বস্তুত, গাজা স্ট্রিপে এখনো শতাধিক পণবন্দি আটক। গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর হামাস ওই ব্যক্তিদের পণবন্দি করে। এর আগে বেশ কিছু বন্দিকে মুক্তি দিলেও এখনো বহু মানুষ হামাসের হাতে আটক। এদিকে ইসরায়েলে প্রায় প্রতিদিনই পণবন্দিদের মুক্তির দাবিতে মিছিল বের হচ্ছে। বন্দিদের পরিবারের সদস্যেরা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

হামাসের বক্তব্য এদিকে প্যারিসে যে বৈঠক হচ্ছে, সেখানে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে মিশর, কাতার এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা। দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার চাপ তৈরি করছে এই দেশগুলি। সম্প্রতি একটি খসড়া প্রস্তাব তারা তৈরি করতে পেরেছে সর্বসম্মতিক্রমে। হামাসের কাছে এই সেই পত্র পাঠানো হয়েছে। হামাস সবুজ সংকেত দিলে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব।

চুক্তিতে বলা হয়েছে একশজন পণবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। হামাস একাজ করলে ইসরায়েল দুইমাসের জন্য সংঘর্ষ-বিরতির কথা ভাবতে পারে। হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবটি নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাচ্ছে।

বার্তা বাজার/জে আই