সাতক্ষীরা জেলার ৪টি নির্বাচনি এলাকার প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ ভোটার আগামীকাল রবিবার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সে লক্ষে জেলা ও উপজেলা নির্বাচনি অফিস থেকে ব্যালট পেপার বাদে ব্যালট বক্স, সিল-প্যাড, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে স্ব স্ব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশ, আনসারদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাগন।

দ্বাদশ নির্বাচনে জেলার ৬০২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। যেখানে ১০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ২২জন এবং ৮জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৩০জন প্রতিন্দ›দ্বীতা করছেন। জেলায় ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ২২৪জন ভোটার রয়েছে যার মধ্যে নারী ভোটার ৮ লাখ ৬৯ হাজার ২২৮ জন, পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯৮৪ জন এবং ১২জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন। জেলায় এবার মোট ভোট কেন্দ্র ৬০২টি। এরমধ্যে ভোট কক্ষ থাকবে ৩ হাজার ৭১৮টি। ভোট কক্ষের মধ্যে ১৯৩টি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, তালা-কলারোয়া উপজেলার ৩টি থানার ২৪টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ নির্বাচনি এলাকায় এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৩জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৫৪ এবং হিজড়া ভোটার রয়েছেন ২জন। এই নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোট কেন্দ্র ১৬৮টি। ৫০টি অস্থায়ী ভোট কক্ষসহ মোট ভোট কক্ষ ৯৮৯টি।সাতক্ষীরা-১ আসনে প্রতিদ্ব›দ্বীতাকারী প্রার্থী রয়েছেন ১০জন।

প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপন, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গলের প্রার্থী সৈয়দ দিদার বখত, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী ইয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী শেখ মো: আলমগীর, তুণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী সুমি, স্বতন্ত্র দোলনা প্রতীকের এসএম মুজিবুর রহমান ওরফে সরদার মুজিব, স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মো: নুরুল ইসলাম, স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র কাচি প্রতীকের শেখ মুজিবুর রহমান পত্রিকায় প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং মুস্তফা লুৎফুল্লাহর পক্ষে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সাতক্ষীরা-০২ (সদর) আসনে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৬০৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৯ হাজার ২১৭জন, নারী ২ লাখ ১ হাজার ৩৮৮জন এবং হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৩জন। সদরে এবার মোট ভোট কেন্দ্র ১৩৮টি। এরমধ্যে ১৫টি অস্থায়ী ভোট কক্ষসহ মোট ৮২৬টি ভোট কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা-২ আসনে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী রয়েছেন ৭জন। এরমধ্যে জাতীয় পাটি মনোনীত লাঙ্গলের প্রার্থী মো: আশরাফুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপিলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান বুলু, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা ফারহান মেহেদী, স্বতন্ত্র কাচি প্রতীক ইনসান বাহার বুলবুল, স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবং স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. আফসার আলী। প্রার্থীদের মধ্যে কাচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এনছান বাহার বুলবুল লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার অভিযানে অংশ নেন।

আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ আসনে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ২৪৬ জন, নারী ২ লাখ ১৩ হাজার ১৩১জন এবং ৩জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন। এই আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১৫৪টি। এরমধ্যে ৭৭টি অস্থায়ী ভোট কক্ষসহ মোট ভোট কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে ৯৩৫টি।

সাতক্ষীরা-৩ নির্বাচনি এলাকায় এবার প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন ৬জন প্রার্থী। প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ. ফ. ম. রুহুল হক, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গলের প্রার্থী মো. আলিফ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী মো: আব্দুল হামিদ, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মো: মঞ্জুর হোসেন, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের রুবেল হোসেন এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম এল) এর চাকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ তরিকুল ইসলাম।

শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন এবং নবগঠিত একটি পৌরসভা নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ নির্বাচনী এলাকা গঠিত। এই নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৯৩জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৪জন, মহিলা ভোটার ২ লাখ ১৮ হাজার ৭৫৫জন এবং হিজড়া রয়েছেন ৪জন। এই নির্বাচনি এলাকায় ভোট কেন্দ্র ১৪২টি। এরমধ্যে ৫১টি অস্থায়ী কক্ষসহ মোট ভোট কক্ষ ৯৭৮টি।

সাতক্ষীরা-৪ নির্বাচনি এলাকায় এবার মোট প্রার্থী ৭জন। প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের এটিএম আতাউল হক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী এইচএম গোলাম রেজা, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আশ প্রতীকের আসলাম আল মেহেদী, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো: মাহবুবর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের মো: শফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপিলস পার্টি (এনপিপি) এর আম প্রতীকের প্রার্থী শেখ ইকরামুল এবং স্বতন্ত্র কাচি প্রতীকের মো: মিজানুর রহমান।

এদিকে, দেবহাটা উপজেলা নির্বাচন অফিস চত্বর থেকে নির্বাচনি সামগ্রী বিতরণ কালে সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভোট গ্রহনের লক্ষে রবিবার সকালে কেন্দ্রে ব্যালেট পেপার দেওয়া হবে। আগের দিন যাতে কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেজন্য ইসি এই ব্যবস্থা করেছেন।

তাছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে শেষ করতে প্রশাসন সব ধরণের ব্যবস্থা রেখেছেন। এজন্য মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। যে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলেই যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারবেন।

বার্তা বাজার/জে আই