ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনের একাধিক ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহনে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় দুটি কেন্দ্রের দুই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা উপ-সচিব মো.আতিয়ার রহমানের ১৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় সংসদের ২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ শূন্য আসনে ৫ নভেম্বর ২০২৩তারিখে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন পরবর্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ৯৫ নং যাত্রাপুর নূরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও ১২৭ নং শরীফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের সংবাদ প্রচার হয়। যার প্রেক্ষিতে নির্বাজন কমিশন প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পুলিশ সুপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর মাধ্যমে পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কেরেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন মতে প্রকাশিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যালোচনা মোতাবেক ৯৫ নং যাত্রাপুর নূরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী প্রিজাইডিং অফিসার হোসেন মো. হাবিবুর রহমান, প্রভাষক (সমাজ বিজ্ঞান) আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ১২৭ নং শরীফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, সিনিয়র অফিসার,ইসলামী ব্যাংক, আশুগঞ্জ শাখা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর বর্ণিত অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তিনি নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্থ্য হয়েছেন। ফলে নির্বাচনে দাংয়িত্ব পালনকালে অসদাচরণের দায়ে হোসেন মো. হাবিবুর রহমান, প্রভাষক ও মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, সিনিয়র অফিসার,ইসলামী ব্যাংককে নির্বাচন কমিশন ১৫ নভেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত দুই মাসসময়ের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশ প্রদান করেছেন। একই সাথে তার বিরুদ্ধে চাকুরী বিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহনেরও আদেশ প্রদান করা হয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, উল্লেখিত আদেশ মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহনসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে সাত দিনের মধ্যে গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপ-সচিব মো: আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ভোটে অনিয়মের খবরের বিষয়ে তদন্ত করে ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো: শাহগীর আলম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো.জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা পুলিশ।

৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনের ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়। এতে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু নৌকা প্রতীকে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কলার ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। এই নির্বাচনে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অণিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়।

বার্তা বাজার/জে আই