মাদারীপুরে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র আছে অথচ পরীক্ষা হচ্ছে না। পাশেই হাই স্কুলকে ভেন্যু বা পরীক্ষা কেন্দ্র করে সেখানেই নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা। এ নিয়ে সুশীল সমাজে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে এমন একটি কেন্দ্রের খোঁজ মিলেছে মাদারীপুরে। শুধু তাই নয় জেলার ১৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে কয়েকটি বাদে প্রতিটি কেন্দ্র তাদের পাশের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভেন্যু কেন্দ্র করে নিজ কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছে। আর এ ভেন্যু কেন্দ্রগুলোর অনুমতি দিয়েছে খোদ বোর্ড কর্তৃপক্ষ। আবার ১০০ গজের মধ্যে দেয়া হয়েছে দুটি কেন্দ্রের অনুমোদন।

মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ। চলমান এইচএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্র। এই পরীক্ষা কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে না কোন পরীক্ষা। পাশেই খোয়াজপুর টেকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়কে ভেন্যু কেন্দ্র করে সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এই ভেন্যু কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব খোয়াজপুর সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজেরই অধ্যক্ষ ফেরদাউসি বেগম।

তিনি বলেন, বোর্ডেরই নির্দেশে দীর্ঘ ১১ বছর যাবত ওই স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র চলেআসছে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ড. মোজাম্মেল হক কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী বোর্ডের সিলেকশনে নির্ধারিত কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।

শুধু সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজই নয় হাতে গোনা কয়েকটি কেন্দ্রের কলেজ বাদে প্রায় সব কেন্দ্র কলেজগুলো পাশেই ভেন্যু কেন্দ্র করে তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছেন। ডাসার উপজেলার ১০০ গজের মধ্যে দুই কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড কতৃপক্ষ।

বিশিষ্টজনেরা মনে করেন শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য অদৃশ্য ছোয়ায় এই ভেন্যু কেন্দ্রগুলোর অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, আমরা বলে থাকি শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। কেন এমন অনৈতিক সুবিধার জন্য নিজ কলেজের পরীক্ষা একই কলেজে অনুষ্ঠিত হওয়ায় উদ্বিগ্ন আমরা। বর্তমানে মাদারীপুরের শিক্ষার দিকে তাকালে দেখতে পাই, পরীক্ষার কেন্দ্র থাকা সত্বেও পার্শ্ববর্তী হাই স্কুলকে কেন্দ্র করে পরীক্ষা নেওযাটাই অযাচিত, এতে করে শিক্ষার মান ভেঙ্গে যাচ্ছে। যারা এই নিয়মের ব্যপ্তয় ঘটিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে হবে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের শিক্ষা ও আইসিটি কর্মকর্তা মার্জিয়া সুলতানা,(অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) বলেন, এসব বিষয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের, তারপর যেহেতু অনিয়মের অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখে উর্ধ্বতনদের জানানো হবে।

সরকারি মাদারীপুর কলেজের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদা) প্রফেসর মো. জামান মিয়া বলেন, কেন্দ্র নির্ধারণ হয় স্থানীয় প্রশাসনের সুপারিশে। আর কেন্দ্র নির্ধারন করেন শিক্ষা বোর্ড। এখানে কেন্দ্র থাকতেও কেন্দ্রে পরীক্ষা না হওয়াটা আইনের ব্যাপ্তয়।

প্রয়োজনের বেশী কেন্দ্র করে একদিকে সরকারের অর্থ অপচয় ও শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিতে যে সকল কর্মকর্তা সহযোগীতা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি সচেতন মহলের।

বার্তাবাজার/এম আই