নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) শোক পদযাত্রা, বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলমের নেতৃত্বে শোক পদযাত্রা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে এসে শেষ হয়। পদযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউট, বিভাগ, আবাসিক হল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম। নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। মুখ্য আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এমডি মাসুদ রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রভাষক আফরিদা জিননুরাইন উর্বীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান ভূঞা, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান, প্রক্টর মো. ইকবাল হোসেন, নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, সহকারী রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব ইকবাল, প্রধান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শিব্বির আহমেদ, শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম নুহাশ ও একিনা সাকিন এষা।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন, ৪৮ বছর পেরিয়ে গেল জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে সপরিবারে হত্যার শিকার হন বঙ্গবন্ধু। ওইদিন এ বর্বরতার খবর শুনে আমরা স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। নীরবে অশ্রুজল ফেলেছিলাম। ১৫ আগস্ট কষ্ট, বেদনা ও কান্নার দিন। এদিন বাঙ্গালী জাতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ককে হারিয়েছিল। শুধু বাঙ্গালী নয়; এখনও বিশ্বের যেখানে শোষিত ও বঞ্চিত গোষ্ঠী রয়েছে, বঙ্গবন্ধু তাদের সবার আদর্শ। আজকের এ দিনে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সকল শহীদ সদস্য, জাতীয় চার নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে এ দেশে পাকিস্তানি দোসরদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখনও আমাদের আশপাশে এ ধরনের ষড়যন্ত্রকারীরা ওঁৎ পেতে রয়েছে। জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তোমাদের এ ধরনের অপশক্তির মোকাবিলা করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

আলোচনা সভার পর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

বার্তাবাজার/এম আই