বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও নাকি তাবিথ আউয়ালের এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তিনি বাফুফের সভাপতি হয়েছেন। শনিবার নির্বাচন হয়েছে। ঘোষণাও হয়েছে, তাবিথ আউয়াল নতুন সভাপতি। ২২ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও গতকাল বিকালে তাবিথ জানান, তিনি স্বপ্নের মধ্যে রয়েছেন। গতকাল বিকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বসে কথা বলার সময় তাবিথ বলেন, ‘খুব এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে, ইমোশন লাগছে, অবিশ্বাস্য লাগছে। এখনো মনে হচ্ছে না আমি বাফুফের প্রেসিডেন্ট হয়েছি-বলেই হাসলেন।

ধুমায়িত কফিতে চুমুক দিয়ে বললেন, আমি যখন ফুটবল খেলতাম, তখন কোচ হওয়ার চিন্তা করতাম। বাফুফেতে কিছু হওয়ার কথা ভাবিনি। কখন ভাবলেন সভাপতি হতে চান? তাবিথ বললেন, চার বছর আগে ৩১ অক্টোবর। হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক কিংবা দুই ভোটে সহ-সভাপতি পদে হেরে গেলাম। সেদিনই ওখান থেকে বের হওয়ার সময় শপথ নিয়েছিলাম আর নয় সহ-সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতিও নয়, এরপর সভাপতি পদে নির্বাচন করব। এভাবেই আসা।

প্যানেল করে নির্বাচন না করা প্রসঙ্গে তাবিথ বলেন, আমার কখনো প্যানেল ছিল না। আমি আমার মতো করে এগিয়েছি। আমার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী তারা আমাকে সাহস দিয়েছে। মানুষগুলো আমার ফ্যামিলিতে আছে। পলিটিক্যাল এরিনায় আছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ভোটাররা আমার ওপর আস্থা রেখেছে। এটা হলো সবচেয়ে বড় ব্যাপার। সভাপতি হওয়ার পর সারারাত ঘুমাতে যেতে পারেননি তাবিথ। সরকারের শীর্ষ মহলের ডাকে ছুটতে হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ কর্তার সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলতে হয়েছে। ওপরের মহলের ডাকে দেখা করতে হয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। রাজনৈতিক নেতাদের যাকে দেখা করতে হয়েছে। সবাই তাবিথকে ডেকে নিয়ে ভালোবাসা দিয়েছেন। আশীর্বাদ জানিয়েছেন। অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসেছেন। রাত ২টায় ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন। গাড়ি নিয়ে এখান থেকে ওখানে ছুটতে ছুটতে নির্ঘুম রাত কেটে গেছে বাফুফের নতুন সভাপতির।

বিতর্কিত সময়ে আপনি দায়িত্ব নিলেন কিনা? মোটেও না। আমি রাইট টাইমে এসেছি। আমার বাবা মেরিনার ছিলেন। উনি বলতেন, যখন জাহাজ চালানোর সময় আসল ক্যাপ্টেনের পরিচয় হলো যখন সমুদ্রে ঝড়-ঝঞ্চার মধ্যে জাহাজটাকে সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। নরমাল দিনে যে কেউ জাহাজ চালাতে পারে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা এখন দোলাচলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এ সময় হাল ধরার জন্য বেস্ট পারসনকেই চাই। আমার সঙ্গে এখন ইমরুল ভাই আছেন, উনাকে আমি চিনি, আগে কাজ করেছেন। চার জন সহসভাপতি আছেন। ফুটবলার ইকবাল ভাই আছেন। আরও অনেকেই আছেন নতুন। যাদের সঙ্গে আমি কাজ করিনি। এখন কাজ করার সুযোগ হবে। ভবিষ্যতে বলতে পারব, এখন সব কথা বলতে পারব না-বললেন তাবিথ।

অন্য প্রার্থীরা অনেকেই ফুটবলে কাজ করার জন্য নতুন নতুন কথা বলেছেন। এটা হয়নি, ওটা হয়নি। আপনি কী বললেন? বাফুফের সভাপতি তাবিথ বলেন, সবাই বলে ওরা নাকি কাজ করতে পারে না। কী কাজ করতে চেষ্টা করেছে আর কী কাজ করতে পারেনি সেটা কিন্তু একজনের কাছ থেকে ব্যাখ্যা পেলাম না। এবার দেখতে চাই কী কাজ করবেন আগে বলেন। কেউ কেউ প্রমিজ করেছেন। কেউ জেলা ফুটবল করতে চায়, কেউ জাতীয় দলে কাজ করতে চায়, স্পন্সর আনতে চায়। এখন দেখি কে কতটুকু অবদান রাখছেন। কাজ করার সময়ে আসবে তখন তারা কাজ করে কিনা, দেখা যাবে।

ফুটবলে সমালোচনা লেগেই থাকে এটা নিয়ে কি বলবেন? সমালোচনা থাকবে, সমালোচনা গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। বাফুফের হটসিটে বসেছেন তাবিথ আউয়াল। এমন একটি সময়ে বসেছেন-যখন বাফুফের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলেচনা-সমালোচনা ছিল, হোক সেটা সত্য কিংবা মিথ্যা। বিতর্কিত কিছু কিছু বিষয় রয়েছে। অলরেডি সেগুলো ডিসাইডেড। তারপরও আমি সেই বিষয়গুলো দেখব। সিদ্ধান্ত যা হবার তা হয়ে গেছে। আমি দেখব কোথায় কী হয়েছিল। সেগুলো সবই ঠিক থাকবে। কোনো পরিবর্তন হবে না। আমি বিষয়টা প্রকাশ করতে চাই। আমার ওপর চাপ রয়েছে-বললেন তাবিথ আউয়াল।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ