শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক ২৪ সংসদ সদস্যের আনা ২৪টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামের প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ১৫টি নিলামে বিক্রির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বাই-পেপার কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করেছে। এসব গাড়ির বাজারমূল্য প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা।

বন্দর সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২৪ জন সদস্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় ১৫টি ল্যান্ড ক্রুজারসহ এই ২৪টি গাড়ি আমদানি করেন। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেন। ফলে সাবেক হয়ে পড়ায় এই ২৪ জন শুল্কমুক্ত সুবিধার সুযোগ নিতে পারেননি। ২৪টি গাড়ি গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের কার শেডে আনা হয়। আইন অনুযায়ী ৩০ দিন, অর্থাৎ ১৪ অক্টোবরের মধ্যে আমদানিকারক গাড়ি ছাড় করেননি। এ কারণে কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে নিলামের আয়োজন করতে হবে।

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সাতজন সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি এনে জুলাইয়ে ছাড় করিয়ে নেন। কাস্টমসের কর্মকর্তরা বলছেন, এখনই নিলাম নয়। আমদানিকারকদের চিঠি দেওয়া হবে। তাঁরা চিঠির জবাব না দিলে গাড়িগুলো নিলামের প্রক্রিয়ায় যাবে।

৮৫০ শতাংশ শুল্কহার হিসাবে প্রতিটি গাড়ির বাজারমূল্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। তবে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় তাঁরা ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় এই গাড়ির মালিক হওয়ার সুযোগ পেতেন। কিন্তু এই ২৪ জন গাড়ি ছাড় করানোর আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে তাঁরা বিনা শুল্কে (এমপি কোটায়) গাড়িগুলো খালাস করতে পারেননি। কাস্টমসের সূত্র জানায়, শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক এমপিদের আনা ১৫টি ল্যান্ড ক্রুজারসহ অন্তত ২৪টি গাড়ির নিলাম-সংক্রান্ত কাগজ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখায় রয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার পর্যন্ত বন্দর থেকে কাস্টমসের নিলাম শাখায় ১৮টি নথিপত্র এসেছে। জটিলতা এড়াতে ছয়টি গাড়ি নিলামে তোলার আগে বিধি অনুযায়ী আমদানিকারকের মতামত চাওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, এমপি কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় ২৪ জন সাবেক এমপির আনা গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। গাড়িগুলো নিলামের উঠানোর আগে যেসব প্রক্রিয়া আছে, তা চলছে। এর অংশ হিসেবে ছয়টি গাড়ির আমদানিকারকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা চিঠির জবাব না দিলে এ ছয়টিও নিলামের প্রক্রিয়ায় যাবে।

 

 

বার্তাবাজার/এস এইচ