বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮টি জমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। এর আগে, কোনো হাসপাতালে বা কোথাও এমনটা ঘটেছে বলে কোনো নজির কেউ মনে করতে পারছেন না।
স্থানীয় চিকিৎসকদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের কোনো হাসপাতালে একদিনে এতো যমজ শিশুর জন্ম এই প্রথম। এর আগে রাজ্যের কোনো হাসপাতালে এমন নজির তৈরি হয়েছে কি না, তা চিকিৎসকদের কাছেও অজানা।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার (১৬ অক্টোবর) ২৪ ঘণ্টায় এক জোড়া নয়, দুই কিংবা তিন জোড়া নয়, একবারে ৯ জোড়া যমজ শিশু জন্ম নিলো হাসপাতালটিতে। ৯ জন প্রসূতি এসব যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানান, এই শিশুদের মধ্যে ১১ জন কন্যসন্তান। ৭ জন পুত্রসন্তান আছে এদের মধ্যে। সব মা ও শিশুরাই সুস্থ আছেন। চারজনের ওজন কম থাকায় তাদের এনআইসিইউ’তে (নবজাতকদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রাখা আছে। তারাও ভাল আছে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই চাপ সামলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। জমজ শিশুর জন্ম সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ৯ প্রসূতি পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও তারা সবাই প্রথমবারের মতো মা হলেন।
হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান মলয় সরকার জানান, রেফারেল হাসপাতাল হওয়ায় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ প্রসব করাতে হয় এখানে। পরিসংখানে দেখা যায়, ৮০ জনের মধ্যে একটি জমজ শিশু জন্মায়। এক্ষেত্রে একটি ছাড়া সব প্রসব হয়েছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে। তিনি জানান, চিকিৎসক, অজ্ঞান করার ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার, নার্স সহ অন্যান্য কর্মীরা দারুনভাবে এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।
আর এক চিকিৎসক ডা. সুপ্রতিক বসু জানান, ২ কেজি থেকে ২ কেজি ২০০ ওজন রয়েছে সদ্যোজাতদের। এদের কারো কারো বাবা-মায়ের বাড়ি বাঁকুড়া, হুগলি, নদীয়া। একজনের বাড়ি ঝাড়গ্রামে। দুটি পরিবারের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলায়।
বর্ধমানের কাইতির বাসিন্দা কৃষ্ণা নায়েক। তার পরিবারে জোড়া কন্যা জন্মেছে। নাম দিয়েছেন লক্ষ্মী আর সরস্বতী। শিখা সাঁতরা জানান, তার ভাগ্নীরও জমজ শিশু জন্মেছে। দুই প্রসূতির আত্মীয়াই জানান, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা খুব ভাল। ডাক্তারবাবুরা খুব আন্তরিক।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, এর আগে হাসপাতালে এমনটা হয়নি। এটা এক বিরল ঘটনা ও রেকর্ড। আমরা এটিকে নথিভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করবো।
বার্তাবাজার/এসএম