অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা একটি জনপ্রিয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমরা তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো কোনো কিছুকে নিষিদ্ধ করব না। বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার আইন রয়েছে। আমরা সেই আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করার প্রত্যাশা রাখি। আমরা জুলুম করে কাউকে নিষিদ্ধ করব না। আমরা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করতে পারব বলে বিশ্বাস রাখি।

আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অধ্যাপক পিয়াস করিমের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় আসিফ নজরুল এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, দুই দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংগঠিত হবে। সেখানে আমরা জুলাই গণহত্যার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিব। এ ছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য যত গণহত্যা ঘটেছে, সেগুলোও বিচার করা হবে। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, বহু মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। সব কিছুরই একে একে বিচারের আওতায় আনা হবে।

প্রয়াত অধ্যাপক পিয়াস করিমকে স্মরণ করে তিনি বলেন, সেই সময় পিয়াস করিম ভাইয়ের মৃত্যুর কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যাই। ধানমন্ডিতে তার জানাজা করা হয়। আমরা শহীদ মিনারে পিয়াস করিম ভাইয়ের জানাজা করার ইচ্ছে পোষণ করি, তার মরদের এখানে (শহীদ মিনার) আনার অনুমতি দেবে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেদিন শহীদ মিনারে বিভিন্ন চেতনাধারী গোষ্ঠী আমিসহ নয়জনের ছবি বিছিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, পিয়াস করিম ভাই শিশুর মতো সরল মানুষ ছিলেন। বিগত সরকার একটু কোথাও বেকায়দায় পড়লে তিনি শিশুর মতো খুশি হয়ে যেতেন। আমরা তাকে বলতে শুনতাম, এবার এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হবে। আমরা তখন বুঝাতাম—পিয়াস ভাই, ধৈর্য ধরেন। তা নাও হতে পারে। বহুবার তিনি স্বপ্ন দেখতেন, আজকে সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। কিন্তু আজকে ওনি নাই। আমরা ভাগ্যবান, আমরা বেঁচে আছি। আমাদের প্রতিদিনই ওনাদের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেন, পিয়াস করিমের স্মৃতিকে আমরা বাঁচিয়ে রাখব। পিয়াস করিমের জীবন, কর্ম ও তিনি যা বলে গেছেন- তা আমরা ডকুমেন্টশন করে রাখব। পিয়াস করিমরা দীর্ঘকাল ধরে আমাদের যে সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন, সেটাকে আমাদের বাচিঁয়ে রাখতেই হবে।

সভায় গণঅধিকার পরিষদের সম্পাদক রাশেদ খান ছাত্রলীগের নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। তিনি বলেন, আসিফ নজরুল স্যারের প্রতি আমাদের একটি দাবি রয়েছে। ছাত্রলীগকে অবশ্যই ছাত্র সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। আপনি সরকারের রয়েছেন, আমরা আপনার ছাত্র। এই ছাত্রদের দাবি আপনি পূরণ করবেন।

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সায়ান্থা সাখাওয়াত, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মাহমুদ সৈকত, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাঈদ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

 

বার্তাবাজার/এসএম