‘উপজেলা নির্বাচনে নৌকার পক্ষে গিয়ে আটটি কেন্দ্রে আমি ভোট ডাকাতি করেছি।’ – ২০২৩ সালের জুনে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন চলাকালীন দাম্ভিকতার সাথে এমন উক্তি করে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম ইমরুল কায়েস চৌধুরী।

সেসময় নৌকার প্রার্থী কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র পদ থেকে অপসারিত মাহবুবর রহমান চৌধুরীর নির্বাচনী পথসভায় রাখা তার ঐ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় প্রতিবেদন। পতিত হওয়া স্বৈরাচার সরকারের আমলে হওয়া প্রতিটি নির্বাচনই ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্য হয়ে উঠে ভোট ছিনিয়ে নেওয়ার স্বীকারোক্তিমূলক প্রমাণ। বিষয়টি নজরে আসলে তদন্ত করে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।

স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হলেও ইমরুলের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারনে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ইমরুলের অবস্থান ছিলো বিতর্কিত, কক্সবাজারে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় ছিলো তার সরাসরি সম্পৃক্ততা । গেল ১৬জুলাই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনে ছাত্রদের আন্দোলনে হামলার প্রেক্ষিতে গত ১০ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) এর ১০ ধারা, ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ১৪৭,১৪৯,৩২৩, ৩২৫,৩০৭,১১৪ ৫০৬(২) এবং ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ ধারায় কক্সবাজার সদর মডেল থানার মামলাটি রজু হয়। দায়ের করা মামলার ২৮ নং আসামী আলোচিত এই ইউপি চেয়ারম্যান। কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাহেদ বাবু মামলাটি বাদী। যার নং: ৩০/৬৬৫ ।

সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামীলীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৭৮ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এই মামলা করা হয়। এদিকে সহিংসতার ঘটনায় ইমরুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফয়জুল আজিম নোমান। তিনি জানান, ” যৌথবাহিনী মাঠে তৎপর রয়েছে, সহিংসতায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে সে যতবড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন।” এদিকে এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে ইমরুলকে মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি বলে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

 

বার্তাবাজার/এস এইচ