মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটে বিক্রেতাদের থেকে ক্রেতাদের সংখ্যা কম দেখা গেছে। শনিবার (২৪ জুন) সারাদিন হাটে এ দৃশ্য দেখা যায়।

এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। গরু বিক্রেতার দাবি, ক্রেতাদের অভাব ও সঠিক দাম না পাওয়ায় গরু বিক্রি হচ্ছে না। তবে ক্রেতারা বলছেন, লাখে ২০ হাজার টাকা দরে গরুর দাম বাড়ায় কিনছেন না তারা। এদিকে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে হাটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানালেন রাজৈর থানার ওসি।

জানা যায়, প্রতি সপ্তাহের বুধবার টেকেরহাট বন্দরের গরুর হাট বসে। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রতিবছর ঈদের আগমুহূর্তে শনিবারও হাটটি বসানো হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকেই গৃহস্থ, খামারি ও ব্যবসায়ীরা হাটে গরু বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসতে থাকে। তবে বেলা বাড়লেও ক্রেতাদের চাপ বাড়েনি। এ হাটে বড় গরুর থেকে ছোট গরুর সংখ্যা বেশি দেখা যায়।

মোল্লারহাট থেকে আসা এক ব্যবসায়ী লামন মোল্লা জানান, হাটে গরু কিনতে আসা মানুষের সংখ্যা কম। যারা আসছে তারা সবাই শুধু ঘোরে। কিন্তু গরু কেনে না। এ বছর বাজারের যে অবস্থা তাতে ব্যবসায় লস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি দেখি। খাবারের দাম বেশি হওয়ায় গরু প্রতি আমাদের খরচও বেশি হইছে। আমরা ৮টি গরু আনছিলাম, দুইটা বেচা হইছে।

ঘোষালকান্দির গরু ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ জানান, গরুর দাম কম বলে। আমরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। প্রতিটি গরু কেনা দামের থেকেও ৫-১০ হাজার কম বলতেছে। বিক্রেতার থেকে ক্রেতাদের সংখ্যা কম। এ বছর সব গরু বিক্রি করতে পারবো কিনা জানিনা।

জাহাঙ্গীর মোল্লা, লাভলু, শুভ, লালনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা জানান, এ বছর গরুর দাম বেশি। গত বছরের তুলনায় এ বছর লাখে ২০ হাজার টাকা দরে দাম বেড়েছে। তাই গরু কেনাটা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। তারপরও হাটে ঘুরে দেখতেছি কেনা যায় কিনা।

গরু হাটের হাসিল আদায়কারী আব্দুল হক জানান, বুধবার মূল হাট হলেও ঈদ উপলক্ষে শনিবার গরুর হাট বসানো হয়েছে। মোটামুটি কেনাবেচা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী আমরা হাসিল আদায় করছি।

রাজৈর থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, গরু হাটের মধ্যে সকল ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে একজন অফিসারসহ ৫ জন পুলিশ সার্বক্ষনিক পাহারায় রাখা হয়েছে। আগামী হাটেও থাকবে। আমি নিজেও পরিদর্শন করে দেখেছি। এছাড়া আলাদাভাবে গোয়েন্দা বিভাগও কাজ করছে।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা বলেন, আমরা সব সময়ই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/রাহা