শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার হিসাবরক্ষক তোঁতা মাদবরের (৪৮) উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল-আমিন। বুধবার (৯ অক্টোবর) আহতের ছোটভাই মো: মুরাদ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এর আগে সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধায় তোঁতা মাদবর তার নিজ বাড়ীতে যাওয়ার সময় জাজিরা পৌরসভার হরিয়াশা সেলিম বেপারীর দোকানের সামনে গেলে দুর্বৃত্তরা সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার ঘটনা ঘটায়। পরে তাকে স্থানীয়ার উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। দায়েরকৃত মামলায় আসামীরা হচ্ছেন- জাজিরা পৌরসভার হরিয়াশা ফকির কান্দি এলাকার বাসিন্দা মৃত আইয়ুব আলী ফকিরের ছেলে দেলোয়ার ফকির(৪৮), রফিক ফকির(৩০), আনোয়ার ফকির(৪৫), একই এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন ফকিরের ছেলে সবুজ ফকির(৩২)ও ফকির কান্দি এলাকার বাসিন্দা ওহাব আলী ফকিরের ছেলে শাহ জালাল ফকির(২৮)।
আহতের স্বজন ও মামলা সূত্রে জানা যায়, তোঁতা মাদবর পৌরসভা অফিস থেকে বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে পথিমধ্যে হরিয়াশা এলাকার সেলিম বেপারীর দোকানের সামনে যাওয়ামাত্র আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্ততরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ দলবদ্ধ ভাবে অতর্কিত হামলা করে। এতে তোঁতা মাদবরের মাথা, পিঠ ও হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তোঁতা মাদবরকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। মামলায় দাবী করা হয়েছে তোঁতা মাদবরকে মারধরের পর তার সাথে থাকা ৮৬ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ও পৌরসভার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এদিকে আহত তোঁতা মাদবর জাজিরা উপজেলা সরকারি কর্মচারী ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ঐ ক্লাব থেকে হামলাকারী অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবীতে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্মারকলিপি প্রদান শেষে উপজেলা সরকারি কর্মচারী ক্লাবের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, “তোঁতা মাদবর একজন ভালো মানুষ। তার উপর এমন সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাই ও দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবীতে ইউএনও মহোদয়ের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছি।”
আহত তোঁতা মাদবরের ছোটভাই ও মামলার বাদী মো: মুরাদ বলেন, “আমার ভাই কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। ওরা আমার ভাইকে কোন কারন ছাড়াই পিছন থেকে হঠাৎ করে হামলা করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। ওদের হামলার ধরনে বুঝা যায় ওরা আমার ভাইকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচার চাই।” জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল-আমিন বলেন, “পৌরসভার হিসাবরক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় একটি মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।” এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জাজিরা পৌরসভার প্রশাসক সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, “পৌরসভার হিসাবরক্ষকের উপর এমন ঘৃণ্য হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি। আশা করি কোন অপরাধী ছাড় পাবেনা।”
বার্তাবাজার/এস এইচ