মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কালিগঙ্গা নদীতে তরা ব্রিজ পয়েন্ট ও সরকারি স্থাপনার পাশে নিয়ম অমান্য করে চলছে বালু উত্তোলন । এতে হুমকিতে পড়েছে নদীর পাড়ে বসবাসরত এলাকাবাসীর ঘরবাড়ি ও সরকারি স্থাপনা ।
জানা যায়,২ কোটি ৯ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকায় তরা বালুমহালটি ইজারা পায় মেসার্স মাকসুদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস নামের একটি প্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মাকসুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের অন্তর্গত তরা ব্রিজের পাশে কালিগঙ্গা নদীতে নির্ধারিত সীমানার বাইরে চলছে লক্ষ লক্ষ ফুট বালু উত্তোলন। বালুমহালের নিয়ম অনুযায়ী ব্রিজ বা সরকারি স্থাপনার থেকে এক কিলোমিটারের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করার নিয়ম থাকলেও সেই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, তরা ব্রিজের কয়েকশো মিটারের মধ্যে ও রমজান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে কাটার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। যা বালু মহালের আইন লংঘন। বালু উত্তোলনে ব্যবহার করা কাটারের পাশেই রয়েছে সরকারি,বেসরকারি স্থাপনা, শ্মশান ও বসতবাড়ি । স্থাপনা ও বসতবাড়ি গুলো ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান একাধিক এলাকাবাসী ।
বালু উত্তোলনের বিষয়ে এলাকাবাসী জানান ,বালু উত্তোলন করে এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক লাভবান হচ্ছে কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষের, সরকারি স্থাপনার ও বিদ্যালয়ের। যদি এই বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকে তাহলে খুব শীঘ্রই তোরা এলাকার একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই অচিরেই এই ড্রেজিং এর মাধ্যমে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জানতে মেসার্স মাকসুদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের স্বত্বাধিকারী মাকসুদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় । উক্ত বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন ড্রেজিং প্রকল্প চালু নেই। ২০২১ সালের পর মানিকগঞ্জে আর কোন ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়নি। কোন অনিয়ম করে থাকলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় যথাযথ ব্যাবস্থা নিব।
এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, বালুমহালে নিয়মের বাহিরে গিয়ে কেউ এমন কাজ করে থাকলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, যদি কেউ নির্দিষ্ট সীমানার বাহিরে গিয়ে বালু উত্তোলন করে, তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য,বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সনের ৬২ নং আইন অনুসারে, সেতু কালভার্ট ড্যাম ব্যারেজ বাঁধ সড়ক মহাসড়ক বন রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা হতে সর্বনিম্ন ১ (এক) কিলোমিটার সীমানার মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আরও বলা আছে, ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো নদীর তীর যদি ভাঙ্গনের শিকার হয় তাহলে সেখানে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
বার্তাবাজার/এস এইচ