ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষনা নিয়ে দলের মধ্যে তেমন ক্ষোভ বা অসন্তোষ না থাকলেও প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটির কমিটি সাদা কাগজে ঘোষনা করা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটির নেতাদের নাম ও পদবী সাদা কাগজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে। আবার পদ-পদবী প্রাপ্তরা খুশিতে করছেন মিছিল-মিটিং।

তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সেল এভাবে সাদা কাগজে কমিটি ঘোষণাকে ভলো চোখে দেখছে না। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। জানা গেছে, গত নভেম্বরে শৈলকুপা উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ৮ মাস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও কমিটি দিতে ব্যর্থ হয় নেতৃবৃন্দ। ফলে নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়। তবে ৩ দিন আগে হঠাৎ করেই শৈলকুপার রাজনীতিবিদ, সুশিল সমাজের প্রতিনিধি ও সাধারণ জনগনের ফেসবুক প্রোফাইলে ভেসে উঠে সাদা কাগজে কমিটির ঘোষনার খসড়া। সেই খসড়ায় চোখ বুলালে দেখা যায়, সাদা কাগজে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে মতিয়ার রহমান বিশ্বাসের।

আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন এম আব্দুল হাকিম আহমেদ। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আশরাফুল আজম, সাধারণ সম্পাদক শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকুর। কালীগঞ্জ উপজেলার কমিটিতেও একই চিত্র। তবে এই খসড়ায় নেই জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সীল। গত ৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে সভাপতি আব্দুল হাই এমপি ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু সাক্ষর করেছেন। চার মাস আগে সাক্ষর করা চিঠি সাদা কাগজে প্রকাশ পাচ্ছে প্রায় ৩ মাস পর।

এ সময়ের মধ্যে কি দলীয় প্যাডে কমিটি ঘোষনা করা যায়নি ? এমন প্রশ্ন তুলছেন তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। আবার অনেকে রসিকতা করে বলতে শোনা যাচ্ছে আবিদা সুলতানার সেই জনপ্রিয় গানটি। “সাদা কাগজের মুল্য কি আছে, যদি তাতে কিছু লেখা না থাকে”। সাদা কাগজ হলেও তো তাতে কিছু লেখা আছে। আর লেখা থাকলেও চরবে। বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র কাজী আশরাফুল আজম জানান, আগে কমিটিতে নাম থাকলে কেন্দ্র থেকে সরাসরি কাগজ পাঠানো হতো। তবে এবার তেমনটি পায়নি। শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু বলেন, এ ভাবে সাদা কাগজে কমিটি ঘোষণা দিয়ে তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি হয়েছে।

সাদা কাগজে নাম লেখা কাগজি দেখে মনে হচ্ছে কমিটি আদৌ হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, সাদা কাগজে লেখা থাকলেও সেটাই বৈধ এবং সঠিক। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই। তবে দেশের বাইরে থাকায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই এমপির বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বার্তা বাজার/জে আই