ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা জেএসডি দাখিল মাদ্রাসার সুপার এম এ শহিদ মিয়া প্রণোদনার আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত দিয়েছেন। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আশরাফুর রহমানের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত এ অর্থ ফেরত দেন তিনি।

তবে প্রণোদনার অর্থ মাদ্রাসার শিক্ষকরা গ্রহণ করলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগের জন্য ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলনের বিরতি দেন। এরআগে মাদ্রাসা সুপার এম এ শহিদ মিয়ার পদত্যাগের দাবীতে গত দুইদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) আওতাভুক্ত পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস স্কিমের আওতায় বারাংকুলা জেএসডি দাখিল মাদ্রাসায় পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু অনুদানের সেই টাকার অধিকাংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠে মাদ্রাসা সুপার এম এ শহিদ মিয়ার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াছমীনের নিকট অভিযোগ দেন। সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ইউএনও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এম এম ওয়াহিদুজ্জামানকে নিয়োগ দেন। সমাজসেবা কর্মকর্তা অধিকতর তদন্ত করে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯৬০ টাকার গড়মিল খুঁজে পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর মাদ্রাসা সুপারকে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন ইউএনও।

সৈয়দ সোয়াইব নামে মাদ্রাসার দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাৎ করে সত্যতা পাওয়ার পর ফেরত দিতে গেলে আমরা শিক্ষার্থীরা সে টাকা প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ আমরা আগে দুর্নীতিবাজ এই সুপারের পদত্যাগ চাই। পদত্যাগের জন্য আমরা ৭২ ঘন্টার সময় দিয়েছি। এরমধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে আরও তীব্র আন্দোলন করা হবে।

মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এম এ শহিদ মিয়ার বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তার অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাদ্রাসার সুপার এম এ শহিদ মিয়া জানান, ‘ইউএনও মহোদয় টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়েছি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াছমীন বার্তা বাজার’কে বলেন, ‘মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আসলে বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করা হয়। তদন্ত শেষে আর্থিক গড়মিল পাওয়ায় সেই অর্থ আদায় পূর্বক সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আরও কোন দুর্নীতি ও অনিয়ম পেলে গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।

 

বার্তাবাজার/এসএম