শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে কিশোর কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্প, আইসিভিজিডি প্রকল্পের সংগীত শিক্ষিকাকে রাতযাপনের অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ওই কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক বার মানববন্ধন ও উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জেন্ডার প্রোমোটারগণ।
ঘটনাটি উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এরমধ্যেই ওই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই শিক্ষিকার পরিবারকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা। জানা যায়, গোসাইরহাট উপজেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে আফজাল হোসেন গর্ববতী মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে ঘুষ নেওয়া,আইসিভিজিডির ১৬৯০ জন থেকে ১৬০০ টাকা করে কেটে রেখে ২৮ লাখ টাকার দুর্নীতি, শিক্ষকদের ঠিকমত বেতন না দেওয়া, গভীর রাতে নারী শিক্ষিকাদের ফোন করে রাত্রিযাপনের কুপ্রস্তাব দেওয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত আফজাল হোসেন। এতে কিশোর কিশোরী ক্লাবসহ উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবাভোগীরা। আফজাল হোসেনকে দুর্নীতিবাজ ও চরিত্রহীন কর্মকর্তা উল্লেখ্য করে তার অপসারণ দাবি করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জেন্ডার প্রোমোটারগণ। কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি ওই শিক্ষিকার পরিবার পর্যায়ে যাওয়ার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরবর্তীতে প্রতিকার চেয়ে শরীয়তপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কাছে অভিযোগ জানান ওই ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। শুধু ওই শিক্ষিকাই নয় আরও কয়েকজন শিক্ষিকাতে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষিকা ও ভুক্তভোগী জানান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন তার ক্ষমতা ব্যবহার করে নারী শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করে। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনি। কয়েকজন শিক্ষিকাকে ওই কর্মকর্তা গভীর রাতে মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পাঠাতেন। পরে বাধ্য হয়ে এক শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে গত রবিবার উপজেলা অডিটোরিয়াম হলরুমে এক মিটিংয়ে সবার সামনে প্রতিবাদ করেন। এসময় সেখানে অভিযুক্ত কর্মকর্তা আফজাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগকারী শিক্ষিকারা জানান, শিক্ষিকাদের পাশাপাশি ওনার টার্গেট ডিভোর্সি নারী এবং প্রবাসীদের স্ত্রী। মেসেজ ও মোবাইলে এবং সরাসরি রাত্রিযাপনের কুপ্রস্তাব দিতেন আফজাল হোসেন। এটি নিয়ে পারিবারিকভাবেও ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। পরে সহকর্মীদের কাছে বলার পরও তিনি ভালো হয়নি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করত সব সময়। পরে বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে ওইদিন এক ভুক্তভোগী শিক্ষিকা সবার সামনে প্রতিবাদ করে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোসাইরহাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফজাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়া তার কর্মস্থলে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। শরীয়তপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাফিয়া ইকবাল বলেন, আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ফাইলটি আমি অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত নিবেন, তা বাস্তবায়ন করা হবে।
বার্তাবাজার/এস এইচ