ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এসেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি। ঢাবি শাখার সভাপতি ও সেক্রেটারির পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর জনমনে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন অনেকে।
এদিকে প্রকাশ্যে রাজনীতির চর্চা করতে শিবিরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক গণমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আত্মপ্রকাশকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি এবং তাদের স্বাগত জানাই। তবে একজন একজন করে নয় সবার পরিচয় প্রকাশ করা উচিত। আমরা লক্ষ্য করেছি প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম ও পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ সামনে আসেন।
তিনি আরও বলেন, গোপন তৎপরতার মাধ্যমে কখনো জনসম্পৃক্ততার রাজনীতি সম্ভব নয়। গোপনে এক দলের নেতা হয়েও প্রকাশ্যে অন্য সংগঠনের পদবি ধারণ প্রতারণামূলক আচরণ যা ছাত্র রাজনীতির সঠিক চর্চা নয়।
এ ছাড়া আত্মপরিচয়য়ের সংকট ও অনুপ্রবেশের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে, গত ২১ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সাদিক কায়েম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি হিসেবে দাবি করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
তারপর ২২ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা সম্পর্কে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সেক্রেটারির প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। এর পরই শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
আব্দুল কাদের ওই স্ট্যটাসে ফরহাদ নামের একজনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, শিবিরের সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ফরহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের এবং কবি জসিম উদদীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি ২০২২-২৩ সেশনে জসীম উদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতিও ছিলেন।
পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের নাম প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক চাপের কারণে শিবির প্রকাশ্যে আসতে পারেনি।
বার্তাবাজার/এসএম