বর্তমান জনবান্ধব সরকার দায়িত্ব গ্রহনের পর গত ২০ আগস্ট সব জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে। তবে পরবর্তীতে পদয়নকৃত ডিসিদের মধ্যে ৫৬ জনই ছিল বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের তালিকায়। প্রথম দফায় যে ২৫ জনকে ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়, তাদের মধ্যে মাত্র ১১ জন মেধায় চাকরি পেয়েছেন। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন কোটায় চাকরিতে এসেছেন! বৈষম্যমুক্ত এই বাংলাদেশে সেটা কিভাবে সম্ভব হলো?
প্রথম পদায়িত ২৫ জনের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে দু’জন বিগত সরকারের আমলে নানাভাবে বঞ্চিত ছিলেন। বাকি ২৩ জন নিয়মিত পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যথাসময়ে পেয়েছেন। তারা আবার আগের সরকারের ফিটলিস্টেও ছিলেন!!
উপরোক্ত ঘটনাটি তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায়, জনপ্রশাসন থেকে ২৫ জন প্রার্থীর একটি খসড়া তালিকা প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়, যা জনপ্রশাসন সচিবের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল। পরে সেই খসড়াটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের কতিপয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পরিবর্তন ও পরিমার্জন করেন এবং এই সারসংক্ষেপ প্রধান উপদেষ্টার দ্বারা স্বাক্ষরিত হওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ও যথানিয়মে জিও হিসেবে প্রকাশিত হয়। সেই তালিকায় প্রাথমিক ফিটলিস্টে থাকা ডিসি প্রার্থীদের ৬০% এরও বেশি বাদ পড়ে; এবং সেই তালিকার বেশিরভাগ ডিসি প্রার্থীদের নাম উচ্চতর কর্তৃপক্ষ ডিসি তালিকায় সংযুক্ত করেন। পরবর্তী অর্ডারে আরো ৩৪‌ জনকে ডিসি হিসেবে প্রদান করা হয় যার পুরোটাতেই প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সেই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সেই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কারা? প্রকৃত সেই ঘটনা অনুসন্ধান না করে এখনো কি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের স্টাইলে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই কি সচিবালয়ে কৃত্রিম অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে??

প্রশাসনে গতি ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানান উদ্যোগ নিলেও এখনো তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। প্রশাসনে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা বা ভালো পোস্টিং না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিগত সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি অংশ চরম দলবাজী শুরু করেছে। অতি উৎসাহী কিছু সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মতো আচরণ করেছে। এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগীরা দাপটের সাথে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এতে গত ১৬ বছর ধরে যারা বঞ্চিত তাদের ক্ষোভ ও হতাশা আরও বাড়ছে। আমাদের বিশেষ অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠেছে ভয়াবয় কিছু চিত্র। নিজেদের দুর্নীতির চিত্র আড়াল করতে পদ বঞ্চনার নাটক সাজিয়ে প্রশাসনকে অকার্যকর করার একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে একটি গ্রুপ।
তবে সেই অস্থিরতা তৈরীর নেপথ্যে কারা আছে??
ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেশকিছু চিহ্নিত কর্মকর্তার তথ্য উঠে এসেছে যারা দুর্নীতির কারণে ডিসি হতে পারেনি অথচ নিজেদেরকে বৈষম্যের স্বীকার দাবি করে প্রশাসনে অস্থিরতা তৈরি করছে। তবে কি এখনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিশেষ গোয়েন্দাবাহিনীর প্রভাব রয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রে?
সচিবালয়ে নিয়মিত বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী কয়েকজন কি আসলেই বৈষম্যের স্বীকার?