কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আরহী নামের (তৃতীয় লিঙ্গের) এক হিজড়াকে হেনস্তার দ্বায়ে অভিযুক্ত ফারুকুল ইসলামকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের দিকে স্থানীয়দের অভিযোগের তীর। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ফারুকুল লোহাগাড়া থানার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। সে পড়ালেখার পাশাপাশি ছোটখাট ব্যবসার সাথে জড়িত বলে ‘বার্তা বাজার’কে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাবেদ মাহমুদ।

তিনি জানান, সৈকতে এক হিজড়াকে কানে ধরিয়ে উল্লাস করা অভিযুক্ত যুবক ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজার সদর থানায় রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিজড়া পর্যটকদের হেনস্তার কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ফারুকুলের নেতৃত্বে আরহি নামের এক রূপান্তরকামীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করাচ্ছে একদল অতিউৎসাহী জনতা। সেখানে উপস্থিত ফারুকুল লাঠি দিয়ে ওই নারীকে একাধিকবার আঘাত করেন। অপরদিকে আরেক রূপান্তরকামী হিজড়াকে পুলিশবক্সে নিয়ে হেনস্থা করার ভিডিওতে ফারুকুলকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

সৈকত পাড়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, গত কয়েকদিন আগে সৈকতে পতিতা ও হিজড়াদের উৎপাত বন্ধে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দিয়ে একটি কমিটি করার চেষ্টা করেছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ। এই প্রস্তাবে কেউ সাড়া দেয়নাই। পরে অভিযুক্ত ফারুকুল ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন হিজড়া পর্যটকের উপর হালা চালায়। তার পরের দিন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রশ্রয়ে সৈকতে সৈকতে ভ্রমনের সময় রূপান্তরকামী এক নরীকে হেনস্থা করে। সে নিজেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক পরিচয় দিতেও শুনাগেছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রশ্রয়ের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম ‘বার্তা বাজার’কে জানান, ফারুকুল সহ বেশ কিছু যুবক বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়ে হিজড়া ও পতিতাদের বিষয় নিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে এসেছিলো। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে খামেলায় না জড়াতে তাদের সতর্ক করা হয়েছিলো। এই ঘটনায় ভিকটিম আরহী বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টদের দাবী, এমনিতে চলমান পরিস্থিতিতে দেশের পর্যটন শিল্পে মন্দা ভাব নেমে এসেছে। সেখানে এমন একটি ঘটনা কক্সবাজারের প্রতি পর্যটক বিমুখ করতে যতেষ্ট। তাই এই ঘটিনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

 

বার্তাবাজার/এসএম