গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় শওকত আলী দিদার নামে এক বিএনপিনেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, তাঁর স্ত্রী জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রওশন আরা রত্না ও তাঁদের কলেজপড়ুয়া ছেলে রাফনান আদিত রায়ানসহ (১৭) বিএনপির কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতীর একটি জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে এ হমলার ঘটনা ঘটে। এতে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। চরম ভোগান্তিতে পড়ে ওই সড়কে চলাচলকারীরা।

ঘটনার সময় সেখানে পুলিশ দেখা না গেলেও ঘটনাস্থল থেকে বেশ খানিক দূরে তাদের অবস্থান দেখা যায়।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাড়িবহরে হামলা করে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে। এ সময় সময় টিভির ক্যামেরা পার্সন এইচ এম মানিককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।

জেলা শহরের বেদগ্রামে পথসভা শেষে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া জনসভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। গাড়িবহরটি ঘোনাপাড়া এলাকায় পৌছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একদল সশস্ত্র লোক গাড়ির গতি রোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় এস এম জিলানীর গাড়িসহ অন্তত ৮-১০টি গাড়িতে ভাংচুর চালায় তারা।

এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কের পাশে থাকা গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে পিছু হটে তারা। কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা মাইকিং করে সংঘটিত হয়ে আবারও হামলা চালায়। এ সময় পিটিয়ে ও কুপিয়ে এস এম জিলানীসহ অন্তত ২০ জনকে রক্তাক্ত জখম করে। আহতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি নাসির আহমেদ মোল্লা (৫৫), স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মাহমুদ খান মুরাদ (৪৬), জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক রাজু বিশ্বাস(৩৯), ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লিল্টু মুন্সি (৪৫), ঢাকার মতিঝিলের স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা বাদশা মিয়া(৩৫) ও স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা নিশানসহ (৩১) ১০ জনকে তাৎক্ষণিক গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় গুরুতর আহত এস এম জিলানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, ‘হামলা কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি। তবে তিনি বলেন একবার শুনেছি বিএনপি করেছে, আবার শুনেছি আওয়ামী লীগ করেছে। ঘটনার সময় আমরা ছিলাম না, তাই ঘটনার বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই। ওই সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের গাড়িবহরে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনে আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

 

বার্তাবাজার/এসএম