কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যূষিত নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের বহিষ্কার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় সিংপুর বাজারে ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা বলেন, দলের শৃঙ্খলা এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অমান্য করে সিংপুর বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে নদী ও বিভিন্ন জলমহাল দখল, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এছাড়াও তিনি দলীয় আন্দোলনের বিরোধিতায় ছিলেন।

ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিরুজ্জামান আসলাম বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আমার নামে তিনটি মামলা হয়েছে। ৫ আগস্টের আগে ৩ মাস ৮ দিন জেল খেটেছি। আমার মতো ইউনিয়ন বিএনপির আরো একাধিক নেতার নামে মামলা হয়েছে। সবাইকে জেল খাটতে হয়েছে। অথচ আহবায়ক আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলায় তার নামে কোনো মামলা হয়নি। ইউনিয়নের বাকি সব নেতা আন্দোলনে থাকলেও বিগত ১৭ বছরে হারুনকে আমরা রাজপথে দেখিনি। আমরা রাজপথে থাকলেও তিনি সব সময় দলীয় কর্মসূচির বাইরে থাকতেন। ৫ আগস্টের পর তিনি স্বগৌরবে এলাকায় ফিরে দখলবাজি শুরু করেছেন। সুদিন আসছে দেখে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আমরা উপজেলা ও জেলা কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তাই সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।

ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুকসুদুর রহমান বলেন, ‘ আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি রয়েছে। এমনকি গ্রাম পর্যায়ে কমিটি রয়েছে। ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে প্রায় ২ বছর। এর মধ্যে তিনি একটি সভাও ডাকেননি। আহ্বায়ক হারুন ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে বিভিন্ন হাটবাজার, ঘাট ও বালু মহাল দখলে নিয়েছেন। তাঁর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে হারুনের বহিষ্কার দাবি করছি।’

সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো: মুক্তার উদ্দিন বলেন, ‘হারুন অর রশিদের কর্মকাণ্ডে আমরা খুবই বিব্রত। তাকে বহিষ্কার না করা হলে দলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাসিরুজ্জামান আসলাম। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক মেম্বার, সাকির উদ্দিন, হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মো: কাওসার, আব্দুল কাইয়ুম, আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান সুমন, যুবদল নেতা মমিনসহ ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।

এ বিষয়ে আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ আমাকে দল থেকে সরানোর জন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমি আন্দোলন সংগ্রামে ছিলাম বরং যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা আন্দোলনে ছিল না।’

বার্তাবাজার/এস এইচ