জনগণের স্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন বলেন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর জি কর মেডিকেল কলেজে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে, মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।

এই সংকট মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের সচিবালয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পরও চিকিৎসকরা বৈঠকে অংশ নেননি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ে মমতা জানিয়েছেন, তিনি জনস্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত এবং তার ক্ষমতার প্রয়োজন নেই।

মমতা বলেন, আপনাদের যেমন আন্দোলন আছে, পরিবারগুলো যদি আমাদের কাছে কৈফিয়ত চায়, তাহলে আমাদেরও তো কৈফিয়ত দিতে হবে। আমরা তার জন্য তৈরি থাকবো।

বৃহস্পতিবার রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হতে শুরু করে দুপুর গড়াতেই। চিকিৎসকরা তাদের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজ্য সচিবালয় নবান্নের উদ্দেশে বাসে করে রওনা হন। নবান্নের তরফে জানানো হয়, প্রতিনিধি দলের চিকিৎসকদের সংখ্যা ৩০ এর বেশি ছিল।

এদিকে, নবান্নের গতকালের বৈঠকে চিকিৎসকরা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে ছিল অনড়। সেই দাবি মানতে নারাজ ছিল প্রশাসন। এই পর্ব ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলার পর মুখ খোলেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নবান্নের গেট থেকেও যারা এলেন না, তাদের ক্ষমা করলাম। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করলাম। পদত্যাগ করতে রাজি আছি, আমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই না।

সেই সঙ্গে তিলোত্তমার বিচারের ডাকও দেন মমতা। বলেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আমাদের অনেক অপমান করা হয়েছে। অনেক কুৎসা, অপপ্রচার হয়েছে। সাধারণ মানুষ জানতেন না এর মধ্যে একটা কালার আছে।

মমতা আরো বলেন, আশা করি মানুষ বুঝতে পারছেন ওরা বিচার চায় না, ওরা চায় চেয়ার। আমি মানুষের স্বার্থে এমনকি নিজে পদত্যাগ করতেও রাজি আছি। মুখ্যমন্ত্রীর পদ আমি চাই না। আমি চাই মানুষ বিচার পাক। তিলোত্তমা বিচার পাক, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক।

এদিকে বৃহস্পতিবার এর আগে রাজ্য সচিবালয় ঘিরে কার্যত স্নায়ুযুদ্ধ দেখা যায় দুইপক্ষের মধ্যে। একদিকে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা, অন্যদিকে প্রশাসন।

প্রশাসনের তরফে চিকিৎসকদের ১৫ জনের প্রতিনিধি দলের কথা বলা হলেও চিকিৎসকরা নিজেদের দাবি অনড় রেখে ৩০ জন চিকিৎসককে প্রতিনিধি দলে রাখবেন বলে জানান। পরে নবান্ন জানিয়ে দেয় ঐ প্রতিনিধি দলে ৩০ জনের বেশি ছিলেন। এরপর নবান্নে ঐ ৩০ জন চিকিৎসকের প্রতিনিধি দলকে বৈঠকের জন্য প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তবে নবান্ন সাফ জানিয়ে দেয়, বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং হবে না। অন্যদিকে সেই লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতেই অনড় থাকেন চিকিৎসকরা।

এরপর ২ ঘণ্টার বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রী অপেক্ষা করার পর তিনি নিজের বক্তব্য পেশ করেন। তিনি , এরপরও যদি জুনিয়র ডাক্তাররা বৈঠক করতে চান, তবে মুখ্যসচিব ও নবান্নের অন্যান্য কর্মকর্তারা যেন বৈঠক করেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন। তবে তিনি আপাতত আর আলোচনায় থাকছেন না।

বার্তাবাজার/এমআই