বিএনপি ও জামায়াত জোট জনগণের ভোটাধিকার নস্যাৎ করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকালে ঢাকা জেলা ১৪ দলের উদ্যোগে সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, নিজের নাক কেটে গণমানুষের যাত্রা ভঙ্গ করতে চায় বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। ভোট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের এই ষড়যন্ত্র আমাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এই পন্থা কোনো যৌক্তিক পন্থা হতে পারে না। যেকোনো সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হয়, রাস্তায় বসে আন্দোলন করে কোনো লাভ হয় না।
সংবিধান রাষ্ট্রের সকল দিক নির্দেশনা উল্লেখ করে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র বলেন, সংবিধানের ভিত্তিতে এই দেশের নির্বাচন যেভাবে হবার নির্দেশনা রয়েছে, সেইভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে যদি আপনাদের কিছু পরামর্শ থাকে আপনারা দিতে পারেন। কিন্তু এর বাইরে এই দেশে নির্বাচন হবার আর কোনো ব্যবস্থা নাই। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে হত্যার চেষ্টা করবেন না, জনগণের ভোটাধিকার নস্যাৎ করবার চেষ্টা করবেন না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশে সংবিধানের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই নির্বাচনে বিগত দিনের মতো স্বত:স্ফুর্তভাবে জনগণ অংশ নেবে। মাত্র কয়েক ঘন্টার নোটিশে সাভারের এই বিশাল জনসভা সেই কথাই প্রমাণ করে।
আমির হোসেন আমু জানান, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙ্গালী জাতি ও বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে। আজকে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। আজ বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন রাষ্টনায়কের ভিতর শেখ হাসিনাও অন্যতম।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের এক শ্রেণির লোক যারা সেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকে এই দেশের প্রতিটি কাজের বিরোধিতা করে আসছে। সেই পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের নিয়ে যারা কাজ করে, তারা তাদের মুখপাত্র হিসেবে এই দেশের সকল উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাঁধা সৃষ্টি করে। এখন এরাই আবারো সোচ্চার।
১৪ দলের সমন্বয়ক জানান, ২০০৯ সালে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্মমভাবে পরাজয় বরণ করে। মাত্র ২৯টি আসন তারা লাভ করেছিল। তারপর থেকেই নির্বাচনে তাদের এত অনীহা ও ভয়। তাই তারা যেনতেন ভাবে পরবর্তীতে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। ২০১৩-১৪ সালে অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাস করে ৬০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়ে, হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে ভোট ব্যবস্থাকে তারা বিধ্বস্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মানুষের স্বত:স্ফুর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে আসায় তা সম্ভব হয় নাই। নির্বাচন হয়েছে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনেও তারা অগ্নি-সন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত মানুষ হত্যা করেছিল। আশা করবো আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং আপনারা সংবিধান অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবেন।
বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত জনসভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।
জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব প্রমুখসহ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অন্তর্ভুক্ত সকল ইউনিটের নেতাকর্মীবৃন্দ।
বার্তাবাজার/এম আই