নিরাপদ ও জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষের ক্ষেত্রে ফসলের ক্ষতিকর পোঁকা দমনে কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে অল্প খরচে হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন সাতক্ষীরার কৃষকরা। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বল্প খরচে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে বেশ ভুমিকা রাখতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের কামারালি এলাকার কৃষক আব্দুস সাত্তারের টমেটো খেতের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের চটার সাথে শক্ত সুতা দিয়ে বাঁধা হলুদ আঠালো বোর্ডগুলো ২০ হাত দুরত্ব রেখে পর পর টাঙানো। বোর্ডে বিভিন্ন ধরনের পোকা আটকে মরে আছে। গাছগুলো তরতাজা ও ফলন ভালো হয়েছে টমেটোর ফুল, ফল বা গাছের পাতায় তেমন প্রকার আক্রমণ নেই।

কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া ও কৃষি অফিস থেকে নিরাপদ ফসল চাষের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ তিনি পেয়েছেন। শুধু টমেটো নয় সকল ধরনের সবজি চাষে পোকা দমনে তিনি কীটনাশক স্প্রে পরিবর্তে অবিষাক্ত ও পরিবেশবান্ধব হলুদ আঠালো বোর্ড ব্যবহার করেন। এতে খরচ সাশ্রয় হয় অন্যদিকে নিরাপদ সবজি তার পরিবার ও স্থানীয় ও জেলার বাইরে বাজারের ভোক্তারা খেতে পারে। এক বিঘা জমিতে কীটনাশক স্প্রে করলে আগে মাসে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকার বেশি খরচ হতো কিন্তু এখন এক বিঘা জমিতে ১৫টি হলুদ বোর্ড লাগে এতে প্রথমবার ৬০০ টাকা খরচ হয়। পরবর্তীতে শুধুমাত্র ২০০ টাকায় ১০০ গ্রাম লিওর বা পোকা দমনের আঠা কিনলে এক বছরের বেশি ব্যবহার করা যায়। এভাবে নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে যেমন ফসলে এবং গাছে আক্রমণ করা ক্ষতিকর পোকা নিধন করা যায় অন্যদিকে ফলের উৎপাদন বাড়ে। বিষ প্রয়োগ না করার কারণে বাজারে এ ধরনের নিরাপদ ফল ও শাক-সবজির চাহিদা অনেক বেশি থাকায় দামটাও ভালো পাওয়া যায়।

কামারালি এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, জৈব পদ্ধতির চাষ আগে বুঝতাম না তবে কৃষক আব্দুস সাত্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে হলুদ বোর্ড অনেকেই তাদের খেতে ব্যবহার করছে এবং হলুদ বোর্ড ব্যবহার করে সহজে পোকা দমন করা যায় অন্যদিকে খরচ কম হওয়ায় চাষিরা চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, ফসল চাষের ক্ষেত্রে সকল সময় কৃষকদের নিরাপদ ভাবে চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। জমির উর্বরতা ও শক্তি বাড়াতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার এবং কীটনাশক বিষ যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর এমন স্প্রের পরিবর্তে শাকসবজি ও ফসলের পোকামাকড় দমনে পরিবেশবান্ধব হলুদ আঠালো বোর্ড ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষক আব্দুস সাত্তার জৈব পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

বার্তাবাজার/এম আই