বিগত আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালীন সময় ৩জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সাবেক পুলিশ সুপার সহ ১৪১ জনকে আসামী করা হয়েছে।

যার মধ্যে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের বিএনপি কর্মী ইসলাম মোড়লকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সদর সার্কেলের সাবেক এসপি কাজী মনিরুজ্জামান, ডিবির সাবেক ওসি এনামুল হক, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা জজকোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, এ এসআই পাইক দেলোয়ার, সদর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. নাসির উদ্দীন, এস আই বিধান কুমার বিশ্বাসসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের মৃত একাব্বর মোড়লের ছেলে নিহত ইসলাম মোড়লের ভাই ইসরাইল মোড়ল। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামিরা হলেন, জজ কোর্টের সাবেক এপিপি ওকালত হোসেন, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহাজাদাসহ ৩৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ ই জুন আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আহমেদ স্বপন এর বাড়িতে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে নিহত ইসলাম মোড়লকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ই জুন রাত আনুমানিক ১ টার দিকে উল্লেখিত আসামি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ইসলাম মোড়লের বাড়িতে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়ে ছয়ঘরিয়া নামক স্থানে গুলি করে হত্যা করে। বাদী পক্ষের আইনজীবি এড, আবুবকর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ায় মামলাটি দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি এসময় বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

অপরদিকে, সদর উপজেলার গোবিন্দ কাটি গ্রামের লোকমান দফাদার এর ছেলে শিবির কর্মী মৃত হাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যার দায়ে সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সদর সার্কেলের সাবেক এসপি কাজী মনিরুজ্জামান, ডিবির সাবেক ওসির এনামুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন, জজকোর্টের সাবেক বিপি এডভোকেট আব্দুল লতিফসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত শিবির কর্মীর ভগ্নিপতি সলেমান সরদার সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন ।

এছাড়া পৃথক সময়ে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার তৎকালীন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবুল কালামকে হত্যার দায়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ.ফ.ম রুহুল হক, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, দেবহাটা থানার ওসি তারক বিশ্বাস, কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুল হকসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।


বার্তাবাজার/এস এইচ