স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। এতে ব্যাপক আকারে অন্যান্য খাতের ন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। বন্যায় পানিতে ডুবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।

জানা যায়, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই বিভিন্ন খাতে দেখা দেয় ক্ষত চিহ্ন। ব্যতিক্রম নয় শিক্ষা খাতও। এসব বিদ্যালয়গুলো বেশির ভাগ নিচ তলা পানিতে ডুবে ছিলো। নষ্ট হয়েছে টেবিল-চেয়ারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। অনুপযোগী হয়ে উঠেছে স্কুলের খেলা মাঠ, নষ্ট হয়েছে সড়ক। ভবনের উপরের তলা গুলো মানুষ আশ্রয় নেয়াতে করতে হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। নষ্ট হয়েছে ভবনের বিভিন্ন অংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোটর পাম্প, কম্পিউটার ও প্রিন্টারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হয় ১০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, বন্যায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৮০টি প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আনুমানিক ৮২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দেয় তথ্যমতে, টানা ৭দিনের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬টি মাদরাসা প্রতিষ্ঠান। এতে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১ কোটি ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এসব প্রতিষ্ঠান গুলো গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করেছে।

উপজেলার ঝুলনপোল বেনী মাধব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ খাঁন বলেন, বন্যার সময়ে বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বন্যায় বিদ্যালয়ে নিচ তলা পানি প্রবেশ করে কিছু কিছু আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। স্কুলের মাঠ ও চলাচলের সড়কের ক্ষতি হয়েছে। পুরো স্কুলের আনুমানিক সাড়ে সাত লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ. কে. এম. ফজলুল হক বলেন, বন্যায় প্রাথমিকে ৮৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠাগুলোর নিচের ফ্লোর নষ্ট হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বইখাতা নষ্টের বিষয়ে তেমন কোন তথ্য পায়নি। উপজেলায় অল্প সংখ্যক বই আছে। তারপরও এমন কোন তথ্য আসলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর তালিকা ও ক্ষতির পরিমান মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুত এর সমাধান হবে। উপজেলায় সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ঝুলনপোল বেনী মাধব উচ্চ বিদ্যালয় ও করেরহাট কামিনী মজুমদার উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলায় মোট ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১ কোটি ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।