ঠাকুরগাঁও সীমান্তে লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বিএসএফ এর গুলিতে নিহত ১৫ বছর বয়সি কিশোরের পরিবার। এদিকে পতাকা বৈঠকে লাশ ফেরতের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

নিহত কিশোর জয়ন্ত কুমার সিংহ ছিলেন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। হত্যার পরে লাশটিও সাথে করে নিয়ে যায় বিএসএফ। সে সময় জয়ন্তর লাশ ফিরিয়ে আনতে গেলে বিএসএফ-এর গুলিতে গুরুতর আহতে হয় নিহত জয়ন্তের বাবা। এতে করে কিশোর জয়ন্তর প্রাণহীন নিথর দেহটিও ফেরত পায়নি তার পরিবার।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে নিহত কিশোর জয়ন্তর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, পরিচিত এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজন নিহতের বাড়িতে এসে শোকে মাতম করছে। এদিকে পরিবারের শোকে অসুস্থ হয়ে গেছেন মা জয়ন্তী রাণী। স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আর একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবরে জয়ন্তী রাণী এখন স্থবির। পরিবার জানে জয়ন্তকে আর জীবিত ফিরে পাওয়া সম্ভব না। তাই সবশেষে শুধু জয়ন্তের লাশটি ফেরত চায় তার পরিবার।

এরআগে, সোমবার ভোর রাতে কিশোর জয়ন্ত উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের কান্তি ভিটা সীমান্ত এলাকায় মেইন পিলার ৩৯৩ এর পাশে গেলে গুলিবিদ্ধ হবার ঘটনাটি ঘটে৷

আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, কোনো কারণ ছাড়াই প্রাণ দিতে হয়েছে জয়ন্তকে। নিরাপরাধ এই কিশোরের লাশ ফেরত পাবার আশায় তারা প্রহর গুনছে। তারা জয়ন্তর লাশ ফেরত চায়।

প্রতিবেশি প্রশান্ত কুমার বলেন, এই সীমান্তেই আমার জন্ম। এখন ৭৫ বছর বয়স হয়েছে। বিএসএফ-এর গুলিতে চোখের সামনে অনেক বন্ধু, প্রতিবেশি ও আত্মীয় স্বজনের মৃত্যু দেখেছি। কোনো কারণ ছাড়াই তারা আমাদের মেরে ফেলে।

রাজা সরকার নামে একজন বলেন, আমাদের অনেকে জমিজমা সীমান্ত লাগোয়া, অনেকে গরু ছাগল লালন পালন করি। অনেক সময় আমাদের সীমান্তে যেতেই হয়। কিন্তু এখানে তারা আমাদের দেখলেই মেরে ফেলবে, এটাতো ঠিক না। আমরা সীমান্ত সুরক্ষা চাই। এভাবে নির্বিচারে হত্যা বন্ধ করতে হবে।

ঠাকুরগাঁও ব্যাটালিয়ন (৫০ বিজিবি) ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানজির আহমদ বার্তা বাজারকে বলেন, ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ সাথে পতাকা বৈঠক করেছে বিজিবি। দফায় দফায় তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার পরে নিহতের মরদেহ ফেরত দিবে বিএসএফ।