র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন গুম হওয়া ব্যাক্তির স্বজনরা।
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে গুম পরিবারের স্বজনদের প্রতিবাদ ও সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানানো হয়।
এসময় বাংলাদেশ গুম পরিবারের প্রধান সমন্বয়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন বলেন, ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শতকরা ৭০-৮০% লোক র্যাব দ্বারা গুম, খুন, অপহরণ হয়েছে। ক্রসফায়ারের নামে নাটক সাজিয়ে অন্যায় ভাবে পাখির মতো তারা মানুষ মেরেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত র্যাবে দায়িত্বে থাকা ডিজি, এডিশনাল ডিজি, ডিবির প্রধান ও ডিজিএফআই প্রধান, সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। মেজর (অব.) সাজ্জাদ আহম্মেদ র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিটি সোর্সের আমরা বিচার চাই। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্তি ঘোষণা করে নতুন বাহিনী হিসাবে রুপান্তর করা হউক। বাংলার মানুষ র্যাবকে দেখতে চায় না। তারা একটি সন্ত্রাসী বাহিনী হিসাবে বিশ্বের দরবারে পরিচিত।
তিনি বলেন, জল্লাদের আয়না ঘর কোথায় কোথায় বানানো হয়েছে, বাংলাদেশে কতটি আয়না ঘর আছে তাহা এখনো আমরা জানতে পারিনি। বাংলাদেশে যদি আয়না ঘর থাকে তাহলে বিচার বিভাগ, আদালত থাকার কোনো প্রয়োজন নেই আমরা মনে করি। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জল্লাদের আয়না ঘর উন্মচন করা না হলে বাংলার প্রতিবাদী মানুষকে নিয়ে প্রতিটি সন্দেহ ভাজন আয়না ঘর ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে এবং সব আয়না ঘর ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো করে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারকি আমাদের কথা বোঝে না, নাকি আমরা সরকারকে বুঝাতে পারছিনা।
গত ২৭ আগষ্ট বর্তমান সরকার ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে গেজেট আকারে প্রকাশ করেছেন। সেই গেজেট ৪৫ দিন এর মধ্যে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় ১৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও তারা কোথায় বসবে, কিভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে কোনো রোড ম্যাপ আমরা কিছুই জানতে পারিনি। একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও তাদের থেকে কোনো সৎ উত্তর পাওয়া যায়নি। তার মানে ধরে নেব সরকার আমাদের একটি শান্ত্বনা দিয়ে ঘরে বসিয়ে রাখতে চায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বেল্লাল হোসেন বলেন, আজকে দুঃখের বিষয়, প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের পদ পদবী ক্ষমতা ও চেয়ার নিয়ে ব্যস্ত, স্বজন হারা পরিবারের পক্ষে শান্ত্বনা দেওয়ার মত কাউকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গুম অপহরণ হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিকে অতিদ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। স্বজন হারা প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতি পূরণ ও মাসিক ভাতা অতিদ্রুত চালু করতে হবে। তাছাড়া গুম, খুন, অপহরণের সঙ্গে জড়িতদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের গুম স্বজনদের তদন্ত কার্যক্রম কবে কখন চালু করা হবে, তা জানতে চান বলে জানান তিনি। এ সময় গুম হওয়া কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বার্তাবাজার/এস এইচ