সাড়ে তিন বছর আগে মৃত্যুবরণ করা দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। যে দুই নেতাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন রাজধানীর রামপুরা থানাধীন ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. বাচ্চু মিয়া এবং একই ওয়ার্ডের সাবেক প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সাদেকা হালিম ময়না। এই দুজনই ২০২০ সালে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মসজিদে জুমার নামাজ শেষে রামপুরা থানার বনশ্রী সি–ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ২৬ নম্বর বাসায় ফেরেন হাসিব আহাসান। বাইরে তখন ছাত্র আন্দোলনের মিছিল চলছিল। গোলাগুলি হচ্ছিল। আনুমানিক ২টার সময় হাসিব নিজ বাসার জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলি এসে হাসিবের নাক, চোখ ভেদ করে শরীরে ঢোকে। গুরুতর আহত হন তিনি।

পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় লোকজন হাসিবকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য শ্যামলীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। ২২ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার সময় হাসিব মারা যান।

এ ঘটনায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া মধ্যপাড়ার ১৪৫/২ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মাসুদ রানা ৪ সেপ্টেম্বর রামপুরা থামায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি নিজেকে নিহত হাসিবের প্রতিবেশি দাবি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ ৭০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়। রামপুরা থানার স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীকেও আসামি করা হয়।

এই মামলায় ৬০ নম্বর আসামি করা হয় রামপুরা থানার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. বাচ্চু মিয়া ও ৬৩ নম্বর আসামি করা হয় সাবেক প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সাদেকা হালিম ময়নাকে।

জানা গেছে, বাচ্চু মিয়া ও সাদিকা হালিম ময়না দুজনই ২০২০ সালে মারা গেছেন।

মো. বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘আমার বাবা ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, সাদিকা হালিমকে তিনি চিনতেন। সাদিকা হালিম ২০২০ সালের শেষ দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রামপুরা থানার এসআই রমজান আলী বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত শুরু করেছি। যেখানে হাসিব আহাসান মারা গেছেন, শুধু সেই স্থান পরিদর্শন করেছি। তবে এই মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসলে তদন্তের ব্যাপারে এখনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওই রকম কোনো নির্দেশনা পাইনি।

 

বার্তাবাজার/এসএম