টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে আহেহলা ইউনিয়নের বালিয়াট, ধালাপাড়া ইউয়িন, দেউলাবাড়ী দিঘলকান্দি ইউনিয়নেভেকু দিয়ে কৃষি জমির উর্ভর মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইট ভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায়। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি জমি। জমির মাটি হারিয়ে যাচ্ছে তার উর্ভরতা। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। মাটি কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি প্রয়োজন, অন্যথায় মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের স্বার্থের জন্য অবৈধভাবে চলছে তিন ফসলি জমির মাটি কাটার কাজ। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে কোনো প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই এ সব মাটি যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাঁটিতে। অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষি আবাদ কমে যাচ্ছে-ফসলি জমি পরিণত হচ্ছে জলাশয়ে। সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডেদন্ডিত হইবেন।

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত বা ইউনিয়ন বা গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করিয়া কোন ব্যক্তি ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাচাঁমাল পরিবহন করিতে পারিবেন না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হইলে তিনি ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এসব আইন থাকার পরও ভূমিদস্যুরা আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রশাসন চোখের সামনে এসব কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার পরও প্রশাসনের এই নিরব ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এলাকাবাসীর মনে। দেউলাবাড়ী, ধলাপাড়া, আনেহলা, ইউনিয়েনের সাঙ্গালিয়াপাড়া, দিঘলকান্দি ইউনিয়নের বেংরোয়া এসব মাটি বিক্রির মহাৎসব চলছে। প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় চলছে মাটি কাটার মহাৎসব। বিশজ্ঞদের মতে মাটির৬ থেকে ১৮ইঞ্চি পরিমান থাকে টপ সয়েল। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রায় ১৫-২০ ফুট গর্ত করে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়, এতে পাশের ফসলি জমি ভেঙে পড়ছে। এমনকি টপ সয়েল চলে গেলে সেটা তেরী হতে সময় লাগে তিন থেকে চার বছর। আবার কোনো ব্যবসায়ী কৃষকের রোপণকৃত ফসলি ক্ষেতের উপর দিয়ে নিচ্ছে রাস্তা। ট্রাক দিয়ে মাটি নেওয়ার সময় রাস্তার ধুলায় রাস্তার পাশে থাকা ফসলের মধ্যে ধুলার প্রলেপ পড়ে যায়, শুধু তাই নয়, ধুলা ঢুকে যাচ্ছে বাড়িঘরের ভেতর। জমির টপ সয়েল কেটে ফেলার কারণে জমি অনুর্বর হয়ে পড়ে। পাশাপাশি ভাটা থেকে নিসৃত কার্বনের কারণে ফসল ও আশপাশে থাকা গাছপালারও ক্ষতি হয়। এ ছাড়া এরা কৃষি জমি কেটে ভাটায় ব্যবহার করছে। এতে কৃষি জমির পরিমাণ ও ধান-চালের আবাদ কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার দিলশাদ জাহান মুঠোফোনে জানান, দোফসলী জমিতে ইটভাটা করা যাবে না। কৃষি জমি মাটির টপ সয়েল চলে গেলে মাটির উর্বরতা হারিয়ে ফেলে। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হয় কৃষি জমি।

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিয়া চৌধুরী জানান, যারা মাটি কাটার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম আই