নিজেদের সোনালী সুদিন যেন বেশ অনেকটা দিন আগেই পার করে এসেছে স্পেনের ফুটবল জায়ান্ট বার্সেলোনা। ২০১৫ সালে লুইস এনরিকের অধীনে ট্রেবল জেতার পর থেকেই ইউরোপিয়ান পর্যায়ে সাফল্য নেই কাতালুনিয়ার ক্লাবটির। অনেক কোচ এসেছেন আর গিয়েছেন, তবে বার্সেলোনা আর কখনোই ফেরেনি নিজেদের চেনা রূপে। দলীয় ব্যর্থতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্লাবের আর্থিক দৈন্যদশা।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ট্রান্সফার ডিল থেকে বার্সেলোনাকে সরে আসতে হয়েছে নিজেদের বাজে অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে। এমনকি ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকেও তারা বিদায় বলে দেয় তাদের ভঙ্গুর আর্থিক কাঠামোর কারণে। লজ্জার নজির ছিল ক্লাবের কোচদের পাওনা বেতনের ইস্যুতেও। দলটির সাবেক কোচ কিকে সেতিয়েন বিগত ৩ বছর ধরেই দাবি করেছেন তাকে প্রাপ্য অর্থ এখনো বুঝিয়ে দেয়নি বার্সেলোনা
তবে এবার সেই ঐতিহাসিক বিতর্ক থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেল বার্সেলোনা। ২০২০ সালে ছাঁটাই হওয়া কোচ কিকে সেতিয়েনের বেতন অবশেষে পরিশোধ করেছে হুয়ান লাপোর্তার অধীনে থাকা বোর্ড। বার্সেলোনার ফুটবল সংশ্লিষ্ট একাধিক গণমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর ফলে কাতালুনিয়ান ক্লাবটির ইতিহাসের বহুল আলোচিত এক বিতর্কের শেষ হলো।
২০২০ সালে করোনা চলাকালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে বার্সেলোনার হেরে যায় ৮-২ গোলের ব্যবধানে। ঐতিহাসিক সেই হার এসেছিল কিকে সেতিয়েনের অধীনে। এরপরেই তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছিল সেই সময়ে বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তেমেউয়ের অধীনে থাকা বোর্ড।
এরপর থেকেই কিকে সেতিয়েন দফায় দফায় বার্সেলোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ব্যাপারটা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। অবশেষে তার নিষ্পত্তি করেছে হুয়ান লাপোর্তার বোর্ড। ৮ মাসের দায়িত্ব পালন শেষে বার্সেলোনা বরখাস্ত করেছিল কিকে সেতিয়েনকে। বায়ার্নের বিপক্ষে ৮-২ গোলে হারের পরেই বাদ পড়ে যান এই কোচ। সেসময় বার্সেলোনা তাকে ৬ কিস্তিতে ৪ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করবে বলে জানায়।
যদিও সেটি আর কখনোই হয়নি। বার্সেলোনা আটকে যায় নানাবিধ দেনা এবং আর্থিক বেড়াজালে। বার্তেমেউ বোর্ডের একের পর এক বড় সাইনিং এবং উচ্চ বেতনের কারণে আটকে যেতে থাকে বিভিন্ন প্রজেক্ট। ক্লাবের কিংবদন্তিদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের বেতন কমিয়েছিলেন। লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজদের মতো অনেকেই ক্লাবকে বিদায় বলে দেন চোখের পানিতে।
বার্সেলোনার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অবশ্য বলেছিলেন, বিদায়ের সময় চুক্তির সব শর্ত পূরণ করেননি কিকে সেতিয়েন। যে কারণেই বেতন পরিশোধে অনিচ্ছুক ছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালতের রায় গিয়েছে সেতিয়েনের পক্ষে। আর তারই সুবাদে চার বছর পর এই কোচের বেতন পরিশোধ করেছে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা।
বার্তাবাজার/এমআই