এবার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করায় ভেসে ওঠতে শুরু করেছে ক্ষতির চিহ্ন। তার মধ্যে জেলার ১৭ উপজেলার মধ্যে ৬ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান পূরোপূরি বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি ৩২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানি উঠে জেলার ১৪৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিকে ৬৩৯টি ও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি ৮০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এতে বন্যাকবলিত ১৪টি উপজেলার মধ্যে ৬৩৯টি বিদ্যালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো ক্ষুদ্র মেরামত করে অল্প সময়ের মধ্যে চালু করা যাবে। তার মধ্যে ১০৪টি বিদ্যালয় বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়া এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম সংস্কার বা মেরামতের আগে চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বন্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ৭২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মধ্যে ২০৫টি বড় ধরনের ক্ষতি হয়। যেগুলো মেরামত করা ছাড়া চালু করা সম্ভব নয়। অপরদিকে ৪১৩টি মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। তার মধ্যে ১২৩টি মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। যা মেরামত করা ছাড়া পাঠদান চালু করা সম্ভব নয়। এতে ৬ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার টাকার প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, ৬ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। যেগুলো আংশিক ক্ষতি হয়েছে। সেগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠদান চালু করা হবে। বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলো মেরামত করে চালু করা হবে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ করে পাঠদান উপযোগী করার আবেদন করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানি মাত্র কমতে শুরু করেছে। পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চালুর চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।