গত বছর মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহে ঝড় তোলে ‘হাওয়া’। ছবিটি বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতাতেও বেশ দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। সম্প্রতি ‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। ছবির একটি গানে নাম দেওয়া হয়নি প্রকৃত শিল্পীর। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন ছবিটির নির্মাতা।

‘হাওয়া’ সিনেমায় ব্যবহৃত ‘আটটা বাজে, দেরি করিস না’ গানটি নিয়ে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে। এই গানের স্রষ্টা হলেন কলকাতার বীরভূমের শিল্পী মনিরুদ্দিন আহমেদ। গানটি তার লেখা এবং তারই গাওয়া। যদিও ছবিতে তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন শিল্পী।

ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য বিশ্বজিৎ দাস এ প্রসঙ্গে জানান, ‘আটটা বাজে, দেরি করিস না’ গানটির গীতিকার ও সুরকার মনিরুদ্দিন আহমেদ। ওনার লেখা অসংখ্য গান গেয়েছেন স্বপ্না চক্রবর্তী, আমিনুর রসিদ, কার্তিক দাস বাউল, বাসুদেব দাস বাউলের মতো শিল্পীরা। তিনি বীরভূম জেলা পঞ্চায়েত অফিসের কর্মী ছিলেন এক সময়। সিউড়ি লালকুঠি পাড়ার বাসিন্দা, বয়স প্রায় ৮১।

আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “গানটি ‘হাওয়া’ ছবিতে ব্যবহৃত হয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ঠিকই। কিন্তু গানটির রচয়িতা মনিরুদ্দিন আহমেদ যথাযথ সম্মান পেলেন না। ছবিতে শিল্পীর নাম ব্যবহার না করে প্রচলিত গান বলে চালিয়ে দেওয়া হলো কেন?”

বিশ্বজিৎ আরও জানান, লেখকের হয়ে তিনি ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকসহ সমস্ত কলাকুশলীর কাছে মনিরুদ্দিন আহমেদের সঠিক মর্যাদা দেওয়ার আবেদন রেখেছেন। তবে তার বিশ্বাস, এই বিষয়ে ‘হাওয়া’ ছবির পক্ষ থেকে দ্রুত কোনো না কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিজের সিনেমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় মুখ খুললেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন। তিনি জানান, অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তখন প্রকৃত শিল্পীর নাম জানা যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই সংগৃহীত লেখেন তিনি।

তার কথায়, ‘আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা। এই গান বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে বাসুদেব বাউলের কণ্ঠে। ভেবেছিলাম তার কণ্ঠেই ভালো লাগবে গানটি। সে কারণে পাঁচ বছর আগে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ শুরু করি। তার কাছে গানটির গীতিকার-সুরকার সম্পর্কেও জনতে চাই। আমার ধারণা ছিল তিনি এ ব্যাপারে জানেন। কিন্তু এ বিষয়ে বাসুদেব কোনো তথ্য দিতে পারেননি।’

এখন যেহেতু নতুন করে অভিযোগ উঠেছে তাই যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত শিল্পীর নাম সংযোজন করার আশ্বাসও দেন নির্মাতা। তিনি বলেন, ‘যিনি বা যারা দাবি তুলেছেন আমরা যোগাযোগ করব তাদের সঙ্গে। গানের প্রকৃত গীতিকার-সুরকার পাওয়া গেলে অবশ্যই তার নাম সংযোজন করব।’

প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে মনিরুদ্দিন আহমেদ এই গানটি লেখেন। একটি ক্যাসেটও প্রকাশ করেন। তবে ‘হাওয়া’ ছবিতে নাম না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শিল্পী। তার চাওয়া, গানটিতে যেন তার নামটি ব্যবহার করা হয়।