বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় ১০ লাখ টাকার ত্রাণ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তাদের সংগ্রহ করা ত্রাণগুলো বেসরকারি সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মাধ্যমে নোয়াখালী ও ফেনীর ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ফেনী ও নোয়াখালী বন্যা কবলিতদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ বিতরণ করে রোহিঙ্গারা।

সর্বশেষ শুক্রবার সকালে নোয়াখালী কবির হাট এলাকায় ২০০ মানুষের মাঝে ২ হাজার টাকা সমমূল্যের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্যাকেজ প্রদান করা হয়। এর আগে কয়েকদিনে আগে ফেনীর বিভিন্ন এলাকার ৩০০ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ৩০০ প্যাকেজ ত্রাণ সহায়তা তুলে দেন তারা। রোহিঙ্গারা জানায়, বন্যার্ত মানুষদের সহায়তার জন্য কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্প থেকে ‘রোহিঙ্গা সাপোর্ট’ নামে একটি গ্রুপ করা হয়। এতে ক্যাম্পের লোকজনের মাঝে ব্যাপক সাড়া মেলে। পরে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা মাঝিদের (নেতা) নেতৃত্বে নগদ টাকা ও চাল সংগ্রহ করা হয়। সাধারণ রোহিঙ্গারা কেউ টাকা, কেউ চাল দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ত্রাণ সংগ্রহে কাজ করা কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অ্যাক্টিভিস্ট ইউনুছ আরমান বলেন, আমরা যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিই, তখন বাংলাদেশের মানুষ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ বিপদে পড়েছে। তাই আমরা সবাই মিলে বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় ত্রাণ সংগ্রহ করি। এতে প্রত্যেক ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাসহ দেশ বিদেশ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা একটি বেসরকারি সংস্থার ফিল্ড সহায়তায় ইতোমধ্যে নোয়াখালী-ফেনীতে ১০ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছি। আমাদের ত্রাণ সংগ্রহে কাজ এখনো চলছে।

বেসরকারি সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বিন জমির উদ্দিন বলেন, বেশকিছু রোহিঙ্গা যুবক ক্যাম্পে থেকে ত্রাণ তহবিল এনেছেন। সেগুলো দিয়ে তারা বন্যার্ত মানুষদের জন্য চাল, ডালসহ ২ হাজার টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ৫০০ প্যাকেজ ৫০০ পরিবারের মাঝে পৌঁছে দিতে আমরা সহায়তা করছি। এছাড়া আমাদের ত্রাণ বিতরণ প্রতিদিন চলমান রয়েছে। আলীখালী ক্যাম্পের বাসিন্দা রোহিঙ্গা হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো আয়ের কোনো উৎস নেই। তবুও বন্যার্ত মানুষের কষ্ট দেখে রোহিঙ্গারা মানবিক হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনগণ মিয়ানমার থেকে প্রাণে বাচঁতে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা ক্যাম্প থেকে ৩ লাখের বেশি নগদ অর্থ ত্রাণ সহতায় পেয়েছি। আমরা সেগুলো বন্যার্ত মানুষদের সহায়তায় পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের এ কাজ চলমান রয়েছে।

বার্তাবাজার/এসএইচ