ঢাকা-চট্রগ্রাম মহসড়কের কুমিল্লার অংশে প্রায় ৯০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যানজটে আটকে আছে ত্রাণবাহী গাড়ি। হাইওয়ে পুলিশের দাবি গত তিনদিন মহাসড়কে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে সড়কের অধিকাংশ স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি থাকায় এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপুল ও লেমুয়া ব্রীজ এলাকায় বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে ঢাকার সাথে চট্রগ্রামে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় উভয় দিকে কয়েক হাজার যানবাহন আটকে পড়ে। রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকালে লালপুল ও লেমুয়া ব্রীজ এলাকার মহাসড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও চট্রগ্রাম লেনের স্থানটি ডেবে যায়। পরে সন্ধা থেকে উল্টো লেন দিয়ে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল শুরু করে। মহাসড়কের কুমিল্লা ও ফেনী অঞ্চলের অধিকাংশ জায়গায় বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। গাড়ি চলাচল করার সময় এ সকল গর্তে পড়ে অনেক গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়া দুই লেনে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে ফেনী লেমুয়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৮৭ কিলোমিটার তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের যান চলাচলের খবর পেয়ে ঢাকা এবং চট্রগ্রাম থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহি ও পণ্যবাহি গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ আরো তীব্র ধারণ করে। এতে করে গণপরিবহনের নারী ও শিশুদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যানজটে আটকে পড়ে আছে ত্রাণবাহী গাড়ি। চট্রগ্রাম থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মহাসড়কের যান চলাচলের খবর শুনে রবিবার (২৫ আগস্ট) ৫টায় ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা করি। এখন দিনের ১টা বেজে গেছে। চৌদ্দগ্রামে আটকে আছি।
কক্সবাজার থেকে গত রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় ছেড়ে আসা মার্রসা গণপরিবহনের চালক জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, ‘গত রাতে চট্রগ্রামের মিরশরাইতে সড়কে যানজটে পড়ি। এখন প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। চৌদ্দগ্রামে আটকে আছি। ঢাকায় কখন পৌঁছাবো তা জানি না। যানজটের কারণে কোনো খাবারও পাচ্ছি না। এতে করে যাত্রীদের নিয়ে সীমাহিন কষ্টে আছি।’ জামাল হোসেন নামে এক ট্রাক চালক বলেন, ‘সড়কে যান চলাচল শুরুর খবর শুনে রবিবর (২৫ আগস্ট) রাতে গাজীপুর থেকে গার্মেন্টস পূণ্য নিয়ে চট্রগ্রাম বন্দরে রওনা হয়েছি। ১৫ ঘন্টা হয়ে গেছে এখনো চৌদ্দগ্রাম পার হতে পারি নি ।’
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম বলেন, ‘মহাসড়কের ফেনী লালপুল ও লেমুয়া ব্রীজ এলাকায় দিয়ে খরর বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে সড়কের উভয় পাশে কয়েক হাজার গাড়ি আটকে পড়ে। সড়কে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে অনেক জায়গায় ডেবে গেছে এবং কুমিল্লার অংশে অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকাল থেকে সড়কের ফেনী অংশ থেকে পানি নেমে যাওয়ায় পুলিশের সহায়তায় যান চলাচল শুরু করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ডেবে যাওয়া স্থান এবং গর্তগুলো মেরামতের কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও সড়কে নতুন করে যাত্রী ও পন্যবাহী গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
বার্তাবাজার/এসএইচ