ট্রাভেল পারমিট পেয়ে চিকিৎসার ফলোআপ করে দেশে ফিরতে চান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি ২০১৫ সাল থেকে ভারতের শিলংয়ে রয়েছেন। অনুপ্রবেশের দায়ে তার বিরুদ্ধে করা মামলায় খালাস পাওয়ার প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সালাহউদ্দিন আহমেদ যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারবেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যম থেকে তিনি জানতে পারেন বাংলাদেশ সরকার ট্রাভেল পাশ দিতে সম্মতি হয়েছে। মাঝখানে শুক্র, শনিবার ও রোববার হওয়ায় যোগাযোগ করতে পারেননি। সোমবার সকালে তিনি গোহাটি হাইকমিশনে ফোন করে ট্রাভেল পারমিটের বিষয়ে জানার চেষ্টা করবেন।
তিনি জানান, শিলং থেকে গোহাটি অনেক দূর। তাকে শিলং ত্যাগ করতে হলে এখানকার প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। আবার এতো দূরত্বে যাতায়াত করার মতো শারীরিক সক্ষমতাও তার নেই। এর আগে ট্রাভেল পাশের জন্য দুই ঘণ্টার বেশি সময় হাইকমিশনে বসতে হয়। রিসিভ কপি দিতেও গরিমসি করা হয় বলে তার অভিযোগ। এজন্য এবার আগে টেলিফোন করে নিশ্চিত হতে চাইছেন। সেটি তৈরি হলে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করবেন। ভারত সরকারের কিছু প্রক্রিয়া আছে সেগুলো শেষ করতে হবে। এরপর সেখানে চিকিৎসার ফলোআপ করাবেন।
সালাহউদ্দিন আরও জানান, গত ৫ বছর তিনি শিলংয়ের বাইরে যেতে পারেননি বলে চিকিৎসার বিষয়ে ফলোআপ করাতে পারেননি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় কোথাও যেতে পারেননি। এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সেখানে তার কিডনি ও ঘাড়ের দুটি বড় অপারেশন হয়। তারও আগে বাংলাদেশে তার হার্টে তিনটি রিং বাসানো হয়। এর বাইরে ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে তিনি আক্রান্ত। সবকিছুর ফলোআপ করাতে চান তিনি।
বাংলাদেশে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, তার বিরুদ্ধে কতগুলো মামলা আছে, সেসবের কি অবস্থা তা তিনি জানেন না। দেশে আসার পর ওইসব মামলা মোকাবেলা করবেন তিনি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধার করে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিক তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু ওই মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পাওয়ার পর সরকার পক্ষ আপিল করে। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় তিনি শিলং জজ কোর্ট থেকে খালাস পান, যার ফলে তার দেশে আসায় কোন বাধা নেই।
পাসপোর্ট না থাকায় সালাউদ্দিন পরে দেশে ফিরতে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গোহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন।
গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার আবেদন মঞ্জুর করেছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গোহাটিতে সহকারী হাইকমিশনকে জানিয়েছে।
বার্তাবাজার/এম আই