ভ্যান চালিয়ে তিল তিল করে জমানো টাকায় ৫.০৩ শতাংশ জমি কিনেছেন প্রতিবন্ধি আব্দুর রাজ্জাক (৪৮)। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মুন্নাফের সশস্ত্র অবস্থানে সেই ভিটার দখলে যেতে পারছেনা ভুক্তভোগি পরিবার। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে তাদের।
এ ঘটনায় প্রভাবশালী আব্দুল মুন্নাফ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক। মুন্নাফ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চলনালী দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ আলীর ছেলে। সম্প্রতি এক শিশুকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে আব্দুল মুন্নাফের বিরুদ্ধে।
এদিকে মাথাগোঁজার ঠাঁই চেয়ে গতকাল রোববার সকালে ওই ভিটায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন হত-দরিদ্র প্রতিবন্ধি আব্দুর রাজ্জাক। তিনি চলনালী দক্ষিণপাড়ার মৃত আহম্মেদ আলীর ছেলে। সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাকের বৃদ্ধ মা রাবেয়া বেওয়া (৮৫), স্ত্রী জয়গন বেগম উপস্থিত ছিলেন। মূলত আব্দুর রাজ্জাকের আয়েই চলে তার ৫ সদস্যের পরিবার।
আব্দুর রাজ্জাক কান্নাজড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, শ্রমের টাকায় কেনা ভিটায় শনিবার সকালে টিনের ঘর নির্মাণ করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রভাবশালী মুন্নাফ ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা ওই ভিটাতে অবস্থান করে ভয় দেখান। ভয়ে তিনি ওই ভিটাতে ঘর নির্মাণ করতে পারেননি।
আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে বাস করছেন। ভ্যান চালিয়ে জমানো টাকায় একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে চলনানলী মৌজার আরএস ৮৫ এবং প্রস্তাবিত ১২৯৪ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ১৮৩৭ ও ১৮৩৯ নম্বর দাগের ৫.০৩ শতাংশ জমি কিনেছেন দেড় মাস আগে। অথচ ভিটাতে বসত করতে পারছেন না। তিনি ন্যায় বিচার দাবি করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মুন্নাফ বলেন, ওই ভিটা তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে ভোগ-দখল করছেন। হঠাৎকরেই আব্দুর রাজ্জাক নিজের দাবি করে ঘর নির্মাণ করতে চাচ্ছিলেন। তাই তিনি আব্দুর রাজ্জাককে নিষেধ করেছেন মাত্র।
গুরুদাসপুর থানার উপ পরিপদর্শক রাজিব আলী জানান, প্রতিবন্ধী আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগের তদন্ত করছেন তিনি। ন্যায় বিচারের সার্থে বিষয়টি গভিরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, প্রতিবন্ধী আব্দুর রাজ্জাক দরিদ্র। বিষয়টি নিয়ে আব্দুল মুন্নাফকে ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বার্তাবাজার/এম আই