পীরগঞ্জের ছোট নদী, খাল-বিল পুনঃ খনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রধানমন্ত্রীর মেঘা প্রকল্পের আওতায় চৈত্রকোল হতে করতোয়া নদী পর্যন্ত ৬ হাজার ৭’শ ৮৫ মিটার মরা নদী খাল খনন কাজ করছিল ‘মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স-ঢাকা’ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে মোট খনন কাজের ৬০% শেষ করলেও গত ১০দিন ধরে ৩টি গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক ভূমি মালিক খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি কোন পূর্ববার্তা, প্রচারণা কিংবা ভূমি মালিকদের না জানিয়েই খাল খননের কাজ শুরু করলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ভূমি মালিকরা।

এ ব্যাপারে ভূমি মালিকরা গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ করেছেন জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহে। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ ভূমি মালিকদের তোপের মুখে তারা কোন মন্তব্য না করেই চলে যান।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, যে সব জমির উপর দিয়ে খাল খনন করা হবে তা ব্যক্তিগত সম্পত্তি। যা দীর্ঘকাল যাবৎ নিয়মিত খাজনাদি পরিশোধ পূর্বক চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন জমি মালিকরা। তাছাড়া ওইসব সম্পত্তির মধ্যে কোন খাস সম্পত্তি বা সরকারি খাল,বিল কিংবা কোন প্রকার ক্যানেল নেই।

খনন কাজে বাধাঁদানকারী ভূমি মালিক জয়নন্দনপুর গ্রামের আকমল হোসেন, খয়ের মিয়া, রউফ মন্ডল, কাওছার মিয়া মোনাইল গ্রামের শরিফুল ইসলাম, রজু মন্ডল, আব্দুল খালেক কাশিপুর গ্রামের ফরহাদ মিয়া, মোজাহারুল ইসলাম ও আফজাল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের জীবন থাকতে আবাদী জমিতে খাল খনন করতে দেবোনা। খাল খন করা হলে অনেক ভূমি মালিক আছেন তারা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যাবেন। অপর প্রশ্নের জবাবে ভূমি মালিকরা বলেন, সরকার চাইলে অধিগ্রহণের মাধ্যমে ভূমি মালিকদের ন্যায্য মূল্য দিয়ে খনন কাজ করতে পারেন। তারা আক্ষেপ করে বলেন, রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই মনগড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তাও আবার প্রধানমন্ত্রীর মেঘা প্রকল্পের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।

এ দিকে খনন কাজে বাধাদানের ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শহীদ ব্রাদার্স-ঢাকা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিযুক্ত ইসরাইল মিয়া। খাল খনন কাজে প্রায় দশ দিন যাবত ছয়টি ভেকুসহ অসংখ্য শ্রমিককে বসে থেকে মজুরি দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার প্রদত্ত নীতিমালা অনুযায়ী খাল খনন কাজ করতে এসে কতিপয় মানুষের বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমরা বিষয়টি নিরসনের জন্য রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডে অভিযোগ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সুরাহা না করে কালক্ষেপন করছেন।

ইসরাইল মিয়া আরো বলেন, কতিপয় অতি উৎসাহী মানুষ শুধু খনন কাজে বাধাঁদানেই নয়, আমাদের ব্যবহৃত ভেকুগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেয়াসহ আমাকে ও আমার শ্রমিকদের প্রাণনাশের হুমকী প্রদান করে আসছে। আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পীরগঞ্জ থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

এব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন- যাতে ঐ এলাকায় কোন প্রকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না।

বার্তাবাজার/রাআ