রাজধানী দক্ষিণখানের পূর্ব আজমপুর বাইতুল মা’মুর জামে মসজিদে গত শুক্রবার ২ জুন সোহেল খান তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মসজিদের নতুন কমিটির লোকজনদের উপর একদফা হামলা চালায়। এতে কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, শেখ শামীম রেজা সহ অনেকেই আহত হয়।

পরে দ্বিতীয় দফায় সোনিয়া আক্তার সোনি নামে এক নারী ডিএনসিসির ৫০ নং ওয়ার্ডের মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাম পরিচয় দিয়ে দলবল নিয়ে জোর পূর্বক মসজিদে প্রবেশ করে মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক শেখ মাসুম হায়দার সহ কমিটির লোকজনদের উপর হামলা চালায় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার প্রতিবাদেই মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলন।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় বলা হয়, ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের দাম্ভিকতায় মৃত্যু হুমকি সহ হামলা, মামলা এবং বিভিন্ন নোংড়া ভাষায় গালিগালাজ ও চিৎকার চেঁচামেচি করে মসজিদে মুসুল্লিদের মাঝে ভীতিকর পরিস্থিতির তৈরি করেন।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুম হায়দার দক্ষিনখান থানা পুলিশকে মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করলে দ্রুত পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে তিনি ৪ জুন দক্ষিনখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং- ২২৪। এছাড়াও মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকেও উক্ত নারী ও তার গ্যাং বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

উল্লেখ্য, শেখ মাসুম হায়দার পেশায় একজন গণমাধ্যমকর্মী। তিনি দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর যাবৎ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় কাজ করে আসছেন। ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর “দৈনিক আলোকিত সকাল” পত্রিকায় পাকিস্তানি সুবেহ খানের নাতি সোহেল খান খোল পাল্টে আওয়ামীলীগে সক্রিয়, নেপথ্যে কারা?” শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়। এই নিউজের সাথে প্রত্যক্ষভাবে মাসুম হায়দার জড়িত আছে ধারনা থেকেই মূলত শত্রুতার সুত্রপাত বলে দাবী শেখ মাসুম হায়দারের। কারণ, এই নিউজের পর সোহেল খান গ্যাং থেকে মৃত্যু হুমকিসহ মিথ্যা মামলার ঘানি টানতে হয়েছে তাকে। তার প্রেক্ষিতেই সর্বশেষ মসজিদে ঢু্কে হামলার শিকার হন তিনিসহ বর্তমান কমিটির লোকজন।

এছাড়াও আর একটি বিষয় উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৯ মার্চ থেকে ২০২২ মার্চ পর্যন্ত মসজিদ কমিটিতে সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন সোহেল খান।তার দায়িত্ব পালনকালে মসজিদের হিসাবে গড়মিল, দায়িত্বে অবহেলা, নিয়ম বহির্ভূত কাজ সহ তৎকালীন কোষাদক্ষ মোঃ হারুন অর রশিদের যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করা হয়। ফলে তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমি সহ কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে কারণ দর্শাতে বললে তিনি কারন দর্শাতে ব্যর্থ হয়। পরে কমিটি থেকে সর্বসম্মতিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এই বহিষ্কারাদেশ থাকা অবস্থায় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় ২০২২ এর মার্চে। পরে মুসল্লী ও মোতাওয়াল্লীগনের সমন্বয়ে উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের নিয়ে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। যার বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম এবং সাধারন সম্পাদক আমি শেখ মাসুম হায়দার।

এসময় তিনি আরো বলেন, সোহেল খান গঙ্গের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের দায়ে বর্তমান কমিটি আদালতে সি আর মামলা নং ৬১১/২০২২ দায়ের করেন। যা বিজ্ঞ আদালত দক্ষিনখান থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে দক্ষিনখান থানা সোহেল খান গংদের বিরুদ্ধে ২৪,১৫৭৫২/- চব্বিশ লক্ষ পনের হাজার সাতশত বায়ান্ন টাকা গড়মিলের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখেল করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাইতুল মামুর জামে মসজিদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক শেখ মাসুম হায়দার, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম, শেখ শামীম রেজা, মনির উদ্দিন আসাদ ও উত্তরা প্রেস ক্লাবের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গণমাধ্যম কর্মী।

সোহেল খান গ্যাং বিরুদ্ধে পত্রিকায় খবর ছাপানো সহ অর্থ আত্মসাৎ এর দায়ে মসজিদ কমিটি থেকে বহিষ্কার হওয়ার আক্রোশেই মূলত এই হুমকি, হামলা ও মামলার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। তাই সোহেল খান গং ও আওয়ামী নামধারী সোনিয়া আক্তার সোনির সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ সকলের কাছে এই নেক্কারজনক ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবী জানানো হয়।

বার্তাবাজার/রাআ