ন্যাশ হচ্ছে নন–অ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিসের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি যকৃৎ বা লিভারের একটি প্রদাহ। ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ন্যাশের সম্পর্ক রয়েছে। ফ্যাটি লিভারের একপর্যায়ে শুরু হওয়া লিভারের প্রদাহকে ন্যাশ বলা হয়। ন্যাশ ও ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে স্থূলতা এবং টাইপ–২ ডায়াবেটিস থাকতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং কায়িক পরিশ্রমের অভাব এ সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

 

লক্ষণঃ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ন্যাশের কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। অন্য কোনো কারণে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম অথবা লিভারের কিছু পরীক্ষা করতে গিয়ে ন্যাশ শনাক্ত হতে পারে। কখনো কখনো ওপর পেটের ডান দিকে হালকা ব্যথা বা চাপ অনুভূত হতে পারে। লক্ষণ থাকে না বলে যাঁদের ওজন বেশি, টাইপ–২ ডায়াবেটিস আছে বা যাঁদের পেটের মাপ বেশি, তাঁদের এমনিতেই রুটিন পরীক্ষা করা ভালো।

 

রোগনির্ণয়ঃ
পেটের আল্ট্রাসনোগ্রামের পাশাপাশি অনেক সময় ন্যাশ নিশ্চিত করতে লিভার বায়োপসি করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে লিভারের কিছু বায়োকেমিক্যাল টেস্ট করেও ন্যাশ সম্পর্কে অনেকটা ধারণা করা যায়। লিভারের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে কিছু পরীক্ষা করার দরকার পড়তে পারে।

 

জটিলতাঃ
ন্যাশ প্রতিরোধ অথবা সঠিক চিকিৎসা না করা হলে, এটি লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে রূপান্তরিত হতে পারে। তাই ন্যাশ হলে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই।

 

চিকিৎসাঃ
ন্যাশের চিকিৎসা বেশ জটিল। এ জন্য ন্যাশ প্রতিরোধ করাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত কায়িক শ্রম এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমে ন্যাশ প্রতিরোধ অনেকাংশেই সম্ভব। তা ছাড়া ন্যাশের চিকিৎসায় কিছু ওষুধেরও ভালো ভূমিকা আছে। ডায়াবেটিস এবং রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে একই সঙ্গে সেগুলোও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ওজন কমাতে হবে। ভুঁড়ি কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করতে হবে।

 

 

লিখেছেনঃ ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন

সহযোগী অধ্যাপক, পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াস রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা

 

ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার