প্রচণ্ড গরমে শরীর উত্তপ্ত হয়ে অতি দুর্বলতা, বমির উদ্রেক, মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণকে হিট স্ট্রোক বলে। হঠাৎ করে এমন সমস্যা দেখা দেয়। এটি একটি অতি জরুরি অবস্থা। যাকে বলা হয় মেডিকেল ইমার্জেন্সি। এর সঙ্গে মারাত্মক পানিশূন্যতাও থাকে।

কারা বেশি আক্রান্ত হতে পারেনঃ

খেলোয়াড় বা রোদে পরিশ্রমকারী। যেমন ভ্যান-রিকশা-ঠেলাগাড়ির চালক, হকার, কারখানার শ্রমিক ও কৃষক । শিশু রোদে দৌড়ঝাঁপ, খেলাধুলা—এমনকি বিদ্যালয়ে প্রাত্যহিক সমাবেশ ও শরীরচর্চার (পিটি) সময় তারা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে।

করণীয়ঃ

  • প্রথমেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছায়াময় ও অপেক্ষাকৃত শীতল স্থানে সরিয়ে নিন।
  • সব জামাকাপড় ঢিলে করে দিন। পানি বা ভেজা কাপড় দিয়ে অনবরত সারা শরীর মুছে দিন।
  • বরফের টুকরা ভেজানো ঠান্ডা পানি দিয়েও শরীর মোছা যাবে। জ্ঞান থাকলে খাওয়ার স্যালাইন বা পানি খাওয়ান।
  • দ্রুত কাছের হাসপাতালে নিন। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা হয়, তত ভালো। দেরি করলে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
  • শরীরের তাপমাত্রা বেশি বলে জ্বর ভেবে কোনো ওষুধ দেবেন না।
  • হাসপাতাল খুব দূরে হলে রোগীর পাশে বরফের বড় বড় চাকা রেখে বাতাস দিতে থাকুন।
  • রোগীকে কাত করুন। মুখে জমে থাকা লালা পরিষ্কার করুন।

 

সতর্কতাঃ

  • সতর্কতামূলক কিছু পথ অবলম্বন করলে হিট স্ট্রোকের সমস্যা ঠেকানো সম্ভব। যেমন
  • রোদে অধিক সময় কাজ না করে মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।
  • আগুনের কাছে কাজ করার সময় বিরতি নিয়ে ফ্যানের কাছে বসুন।
  • এ সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করুন (খাওয়ার স্যালাইনও খেতে পারেন)। প্রচণ্ড গরমে চা-কফি পান না করাই ভালো।
  • হালকা সুতির পোশাক পরুন, হালকা রঙের হলে ভালো। কৃষকেরা সম্ভব হলে ছাতা বা মাথায় টোপা ব্যবহার করুন।
  • শিশুদের প্রচণ্ড রোদে বাইরে খেলাধুলা করতে দেবেন না। তাদের বাড়িতে ঠান্ডা জায়গায় রাখুন। অকারণে বাইরে ছোটাছুটি নয়। শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা পর্যাপ্ত পানি পান করছেন কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
  • রোদের মধ্যে দাঁড়ানো যানবাহনে বসে না থেকে নিচে নেমে হাঁটাহাঁটি করুন। ফেরিতে বা যানজটে এটা করা যায়।

লিখেছেন: ডা. সুদিপ্ত কুমার মুখার্জী,

সহযোগী অধ্যাপক, পেডিয়াট্রিক নিউরোসার্জারি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস

 

ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার